১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে কারা লাভবান হয়েছিল মানুষ জানতে চায়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ১৫ আগস্ট কি হয়েছিল আমরা সবাই জানি। আমরা এও জানি, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে যায়নি তাদেরই বসে থাকা নীলনকশায় এ ঘটনা ঘটেছিল। তাদের কয়েকজনকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আরও কয়েকজন শাস্তি পাবেন। আজ বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়, কারা এর পেছনের কুশীলব-সুবিধাভোগী ছিল। এ হত্যাকাণ্ডে কারা লাভবান হয়েছিল সেটাও মানুষ জানতে চায়।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁও রহমতে আলম ইসলাম মিশন ও ইসলাম মিশন এতিমখানায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে উপহার সামগ্রী বিতরণ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দেশের জনগণের দাবি আসছে তাদের খুঁজে বের করার। তারা যদি জীবিত নাও থাকে তবুও তাদের মরণোত্তর বিচারের দাবি নিয়ে আসছে মানুষ। আমি মনে করি জনগণের এ দাবি যথার্থ। একইসঙ্গে যারা এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তাদের চেহারা এবং ষড়যন্ত্রের কথা জানানো উচিত বলে আমি মনে করি। হয়ত অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের সঠিক সন্ধান পেলেও হয়ত তার একটা ধারণা পাব। সেই ধারণাটিও প্রকাশ করার জন্য আমরা যদি কিছু করতে পারি তবে আমরা নিজেদের সার্থক মনে করব।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন বাংলার কথা বলতেন। বাংলার মানুষের কথা বলতেন। তিনি যে একজন ভবিষ্যৎ নেতা হবেন, সেটা তার বাবা ছোটবেলাতেই বুঝতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যদি দেখতেন তার বন্ধু শীতে কাঁপছে, তাহলে তার শীতের চাদরটি দিয়ে দিতেন। এগুলো আপনারা সবই শুনেছেন। সবই জানেন। তার পিতা একদিন দেখেন তাদের ধানের গোলা থেকে সবাই লাইন ধরে ধান নিয়ে যাচ্ছে। ঘটনা কি জিজ্ঞাসা করতেই বঙ্গবন্ধু বাবাকে বললেন, আমি কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করছি তাদের ঘরে খাবার নেই, তাই এখান থেকে যার যতটা প্রয়োজন ততটা নিয়ে যেতে বলেছি। সারাজীবন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করতে হবে সেটাই চিন্তা-চেতনা ছিল বঙ্গবন্ধুর। তাকে নিয়ে বলতে গেলে অনেক ইতিহাস। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ও বঙ্গবন্ধুর কথা বলে শেষ করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমাদের সব গৌরব ও অর্জন শেষ করে দিতে চেয়েছিল পাকিস্তানি দোসররা। পুরো আগস্টজুড়ে শোকের মাতম। মানুষকে সহজভাবে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। নিজের গায়ের জামা বা চাদর মানুষকে দিয়ে শিখিয়েছেন কীভাবে মানুষের পাশে থাকতে হয়। এ দেশের গণমানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু এ দেশকে ভৌগোলিক মুক্তি দিয়েছে। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আমার বিশ্বাস, জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপ দিয়ে এ দেশ আরও এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে অচিরেই এ দেশ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপ নেবে।
অনুষ্ঠানে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এবং এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামসহ অনেকে।
এমএম/এসএসএইচ/