মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা : বাইরে জনসমুদ্র, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
আলোচনা-সমালোচনা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে করোনা সংক্রমণের রেকর্ডের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হলো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। শুক্রবার (২ এপ্রিল) সকাল দশটা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। তবে সাতটা থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভিড় জমাতে থাকেন পরীক্ষার্থী আর অভিভাবকরা। ফলে সকাল আটটার মধ্যেই প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনের স্থান পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষার্থীরা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির এ সময়ে পরীক্ষার বিরোধিতা করে আসছিলেন। স্বাস্থ্যবিধিতে কঠোর না হলে বড় ঝুঁকিরও শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা সংক্রমণের মধ্যে অবশ্যই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিতে হবে। নয়তো বড় একটা ঝুঁকি তৈরি হবে।
তিনি বলেন, সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে অবশ্যই একাধিক মাস্ক পরে আসতে হবে। হাতে গ্লাভস, প্রয়োজনে মাথায় ক্যাপ পরে আসতে হবে। আর সঙ্গে অভিভাবকদের না নিয়ে আসাই উচিত।
আরও পড়ুন : এক আসনের বিপরীতে ২৮ জন
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা : ভেতরে কড়াকড়ি বাইরে নেই স্বাস্থ্যবিধি
শুক্রবার (২ এপ্রিল) সারাদেশের ৫৫টি কেন্দ্রে একযোগে সকাল ১০টায় শুরু হয় এ পরীক্ষা। প্রতিটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রে প্রবেশের কড়াকড়ি থাকলেও বাইরে দেখা গেছে ভিন্নচিত্র।
সরেজমিনে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই স্ব-স্ব পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে ভিড় জমান পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা পূর্বে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন পরীক্ষার্থীরা। কেন্দ্রে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পরিমাপ ও হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হয়। কিন্তু বাইরে পরীক্ষার্থীর অভিভাবকরা গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছেন। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। উপেক্ষিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধিও।
অভিভাবকরা বলেন, কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাভ কী? বাইরেই তো বিপুল পরিমাণ মানুষের ভিড়। এখানে করোনা সংক্রমণ হওয়া স্বাভাবিক।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা পরীক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। আগেই জানিয়ে দিয়েছি, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসতে হবে। এক ঘণ্টা পরীক্ষার পুরো সময় মাস্ক পরে থাকতে হবে। মাস্ক পরে আসার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা আছে। তবু যারা ভুল করে মাস্ক না পরে এসেছেন, পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে।
সংক্রমিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ আছে তাদের আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো প্রতিটা কেন্দ্রে আইসোলেশন কক্ষের ব্যবস্থা আছে। তাপমাত্রা পরিমাপ করে সবাইকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়েছে।
এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আবেদন করেন ১ লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী। আগের নিয়মেই হয়েছে এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা। ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষার ফলাফলের সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জিপিএর ১০০ নম্বরসহ মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে জাতীয় মেধা তালিকা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে মেডিকেল কলেজগুলোয়।
টিআই/এইচকে/জেএস