খাল সংস্কার ও বনায়নের নামে সরকারের ২৩ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী রবিউল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন থেকে অনুসন্ধানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কার্যালয়কে।

শনিবার (২২ জুলাই) দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা (জনসংযোগ) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সংস্কারের কয়েক মাস না পেরোতেই ভেঙে পড়েছে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের ১১ কিলোমিটার খালের পাড়। সংস্কারকাজ চলাকালে খালপাড়ের অসংখ্য গাছপালাও উজাড় করা হয়েছে। সংস্কারকাজের শর্তানুযায়ী সবুজায়নের উদ্দেশ্যে কয়েক লাখ গাছের চারা রোপণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অথচ ঠিকাদারকে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্প অভ্যন্তরে বয়ে চলা ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ২টি খাল সংস্কারের দরপত্র গৃহীত হয়। কুতুপালং মধুরছড়া থেকে জুমেরছড়া হয়ে বালুখালী ব্রিজ পর্যন্ত এবং ২০ নং ক্যাম্প থেকে বালুখালী খেলার মাঠের পাশের ব্রিজ পর্যন্ত ১১ কি. মি. খাল সংস্কারে ২৩ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়।

সংস্কার কাজে দীর্ঘ ১১ কি. মি. খালের বিদ্যমান তলদেশ থেকে ১ মিটার বা সাড়ে ৩ ফুটের মতো খনন করা, ভাঙনরোধে খালের দুই পাড়ে আরসিসি ব্লক বসানো ও সংস্কারকৃত খালের দুই পাড়ে পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্য ঔষধি ও দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রোপণসহ পরিচর্যাকরণ কাজ বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু এলাকাবাসী এডিবির অর্থায়নে গৃহীত উক্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, শিডিউলে বর্ণিত নির্ধারিত গভীরতায় না কেটে দায়সারাভাবে লোক দেখানো খাল কাটা হয়েছে। ভাঙনরোধে খালের তীরের দুইপাশে কম পুরুত্বের, নিম্নমানের ব্লক বা স্ল্যাব বসানো হয়েছে। যা সংস্কারের ৫/ ৬ মাসের মাথায় গত বর্ষার শুরুতে অধিকাংশ স্থানে ভেঙে পড়ে পাকা স্ল্যাব বা ব্লকগুলো। সম্প্রতি উখিয়া এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম নিজে রোহিঙ্গা লেবার দিয়ে ভাঙন স্থানে বালির বস্তা দিয়ে মেরামতের অপচেষ্টা করেছেন বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ। খাল সংস্কারের সময় এলজিইডিকে অনিয়মের অভিযোগ করলেও ওই প্রকৌশলী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানা গেছে। 

আরএম/এসকেডি