ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম। ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা এ ঘটনায় অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকে অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। 

মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি তার একজন সঙ্গীকে নিয়ে এখানে এসেছিলেন। তারা মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে সহিংসতা বাড়ছে সেজন্য কথা বলছিলেন। তিনি আরো বলেছিলেন সেখানে আমাদের আর্মি এবং বর্ডার গার্ড সবাই রয়েছে, তাহলে সহিংসতা কেন হচ্ছে?

আমরা এটাই বলেছি যে, ছোট একটি জায়গায় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন (১২ লাখ) মানুষ এখানে, নানা ধরনের সমস্যা তো এখানে থাকবেই, সেসব সমস্যা থেকে তৈরি হবে সহিংসতার। সহিংসতায় শুধু তারাই মারা যাচ্ছে না। আমাদের সেনাবাহিনীর একজন দক্ষ অফিসারও মারা গেছেন, এয়ারফোর্সের একজন দক্ষ অফিসার মারা গেছেন। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিফহাল রয়েছি, আমাদের সক্ষমতাও আমরা বাড়াচ্ছি যাতে করে কিলিং বন্ধ হয়। এটাই আমরা তাকে জানিয়েছি, বলেন মন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী) হিরো আলম শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন, সেটি জানতে চেয়েছেন। আমরা বললাম, এটা কেন হয়েছে এখনও বলতে পারব না। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা ছিল, যেন একটা শান্তিময় পরিবেশ থাকে। আমরা যেটুকু দেখেছি, নির্বাচনের শেষের দিকে কয়েকজনের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত হন এবং লিপ্ত হয়েই দেখা গেল কয়েকজন যুবক তার ওপর অ্যাটাক করে। আমরা তাকে জানিয়েছি, এরইমধ্যে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সবাইকে অ্যারেস্ট করব এবং এটা তদন্ত করে বের করতে চেষ্টা করব, এ রকম একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কার দ্বারা এই ঘটনা ঘটানো হলো। এগুলো আমরা বের করব।

নির্বাচনে একদল জিতবে একদল হারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নেপথ্যে কারা এই কাজটি করেছে? একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য কিংবা কি উদ্দেশ্যে করেছে সেটা জানার প্রয়োজন রয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা করছি। যাদেরকে ধরেছি, তাদের জবানবন্দি নেব। আমরা সবকিছুই মিলিয়ে দেখব।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুলিশের গাফিলতি থাকলে সেটি তো পুলিশ জবাব দেবে। আমরা সেটি দেখবই। পুলিশ সাধারণত যাতে কোনোরকম গন্ডগোল না হয়, কোনো কেন্দ্রে কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য পুলিশ ওখানে ছিল। পুলিশের যদি কোনো গাফিলতি থাকে অবশ্যই আমরা সেটি দেখব। অলরেডি পুলিশকে আমরা বলেছি, তোমাদের কোনো অবজারভেশন আছে কি না, সেটিও তোমরা জানাবা, আমরা মূল ঘটনাটি কি সেটি জানতে চাই।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে কে হারল, কে জিতল সেটি বড় কথা নয়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্ন হয়েছে, সেটিই হচ্ছে কথা। আমি মনে করি এখানে নিশ্চয়ই কোনো ইন্ধন ছিল হিরো আলমকে নিয়ে, আমরা সেটিই বের করতে চেষ্টা করেছি। কেন এই ঘটনাটি ঘটল সবকিছু আমরা তদন্ত করে দেখছি, তদন্তের পর আমরা বলতে পারব। 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ম্যাসেজ আমাদের কাছে এটিই এলো, আমাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে, আমরা সেটা থাকব। 

এসএইচআর/জেডএস