বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলার ১৩তম দিন আজ। দিনের শুরুতে অনেকটাই ফাঁকা ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। বেলা গড়িয়ে বিকেল নামতেই পাঠক-দর্শনার্থীদের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত হয় বইমেলা। বাংলা একাডেমি অংশে পাঠক-দর্শনার্থী সমাগম কিছুটা কম হলেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছিল পরিপূর্ণ।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সরেজমিনে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, আজকের মেলায় বয়োজ্যেষ্ঠদের তুলনায় তরুণ প্রজন্মের পাঠক-দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো।

লেখক, প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, প্রতিদিনই মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে তরুণ প্রজন্মের সরব উপস্থিতি থাকে। দলবেঁধে তরুণ-তরুণীদের ঘোরাফেরা, গল্প, আড্ডা, গান আর উচ্ছ্বাসে মুখরিত থাকে পুরোটা প্রাঙ্গণ। 

অন্য প্রকাশনীর মিডিয়া কোঅর্ডিনেটর তন্ময় সাহা বলেন, এবারের বইমেলায় উপস্থিতির অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। অন্যান্য বছর মেলায় সব বয়সী মানুষের সরব উপস্থিতি ছিল। কিন্তু এ বছর করোনা সংক্রমণের কারণে অনেক বয়স্ক মানুষ মেলায় আসছেন না।

পাঁচ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক হাসনাত। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরে বই দেখার পাশাপাশি দুটি বইও কিনেছেন তিনি।

অনিক হাসনাত বলেন, ছোট বেলা থেকে প্রতিবছর বই মেলায় আসা হয়। সারা বছরই বইমেলার জন্য অপেক্ষায় থাকি। মাঝে এক বছর অসুস্থতার কারণে বইমেলায় আসতে পারিনি। এ বছর আজ প্রথম মেলায় এসেছি।

অনিকের বন্ধু শামীম রহমান বলেন, আজকে মূলত বইমেলা ঘুরে দেখার জন্য এসেছি। সঙ্গে বইও পছন্দ করে যাব। উপন্যাস ও ছোটগল্প আমার বেশ পছন্দ। আজকে সব ঘুরে ঘুরে পছন্দ করে যাব আরেকদিন এসে বইগুলো কিনব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অমিত চক্রবর্তী এসেছেন তিন বন্ধুর সঙ্গে। বললেন, ক্যাম্পাস খোলা থাকলে প্রতিবছরই দুই-তিনবার আসা হয় বইমেলায়।  কিন্তু এবার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সেই সুযোগটা নেই। ঢাকায় বিশেষ কাজে এসেছিলাম এই ফাঁকে বন্ধুরা একসঙ্গে চলে এলাম বইমেলায়।

মেলায় তরুণ প্রজন্মের ব্যাপক উপস্থিতি জাতির জন্য কল্যাণকর বলে মনে করছেন ঢাকা কলেজের অধ্যাপক শামিম আরা বেগম। তিনি বলেন, তরুণরাই জাতির ভবিষ্যৎ। বইমেলায় যে বইগুলো প্রকাশিত হয় সেগুলো অবশ্যই মানসম্মত। তরুণ প্রজন্ম যদি ভালো বই পড়ার মাধ্যমে ভালো মানুষ হতে পারে এবং উন্নত চেতনার অধিকারী হতে পারে তবে তা অবশ্যই জাতির জন্য কল্যাণকর। আমি মনে করি, এ ধরনের আয়োজন বছরজুড়ে চলমান থাকা প্রয়োজন।

এদিকে বইমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১১২টি। এর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক বইগুলো হলো- গল্পগ্রন্থ-৮, উপন্যাস-১২, প্রবন্ধ-৮, কবিতা-৫০, গবেষণা-২, ছড়া-১, শিশুসাহিত্য-১, জীবনী-২, মুক্তিযুদ্ধ-১, বিজ্ঞান-৪, ভ্রমণ-২, ইতিহাস-১, রাজনীতি-১, বঙ্গবন্ধু-৪, ধর্মীয়-১, অনুবাদ-১, সায়েন্স ফিকশন-১, অন্যান্য-১২টি বই।

আরএইচটি/এসকেডি