ইইউ প্রতিনিধিদের আইন সচিব
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের আইনগত কাঠামোই যথেষ্ট
আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ার বলেছেন, বাংলাদেশের আইনগত কাঠামো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট কিনা; সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। আমরা বলেছি, সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার জন্য আমাদের দেশের যে আইনগত কাঠামো আছে, সেটাই যথেষ্ট।
বুধবার (১২ জুলাই) আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন গোলাম সারওয়ার। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলে ছিলেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষক রিকোর্ডো চেলেরি, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি আইওনাও ও আইন বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিনা ডোস রামোস আলভেস।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন সচিব বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পাস হয়েছে, সেখানে ৯১ (এ) ধারায় নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তারপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯১ (এ)(এ) ধারা যুক্ত করে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার ব্যবস্থা করেছেন। এতে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিনিধিরা) সন্তুষ্ট হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে সম্প্রতি যে আইন হয়েছে, এই উপমহাদেশে এমন আর কোনো আইন নেই। আমরা বলেছি, সার্চ কমিটির যে ফরমেশন আছে, সেখানে আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, যিনি প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে মনোনীত হবেন। এছাড়া মহা-হিসাব নিয়ন্ত্রক, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং দুজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যাদের একজন নারী থাকবেন। ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের কাছে আমরা আইনও দিয়েছি। এ বিষয়ে তারা আমাদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য পেয়েছেন।
দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনো আলোচনা হয়নি।
বিচার বিভাগ স্বাধীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৭ সালের নভেম্বরে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পরে যখন নির্বাচন কমিশন আমাদের একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চায়—যেটা আরপিও ৯১(এ) ধারায় আছে—সেক্ষেত্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য রিকুইজিশন দেওয়া হলে, আমরা সুপ্রিম কোর্টের সম্মতি নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্বাচন কমিশনে ন্যস্ত করি। এরপর তারা নির্বাচন কমিশনের অধীন চলে যায়। সবকিছু ইলেকশন কমিশনের সুপারভিশনে তারা করেন। অর্থাৎ নির্বাচনের আগের ও পরের দুদিন এবং নির্বাচনের দিন—এই পাঁচ দিন তারা ইসির অধীন দায়িত্ব পালন করেন। তখন নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে তারা সামারি ট্রায়াল করেন। আরপিওর বিধান অনুসারে তারা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এই বিধানের তারিফ করেছে ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা।
তারা কোনো পর্যবেক্ষণ দিয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই আইনটা যথেষ্ট কিনা। আমরা বলেছি, হ্যাঁ। আমাদের যে ম্যাকানিজম আছে, সেটা যথেষ্ট। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্য কিছু করার দরকার নেই।
আরপিও নিয়ে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের কোনো পর্যবেক্ষণ ছিল কি না; জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আইনগত কাঠামোর কথা তাদের বলেছি।
এসএইচআর/এসকেডি