জাতিসংঘের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ম্যামি মিজুটরি বলেছেন, বাংলাদেশ ৩০টি দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় আছে। সারাবিশ্বের দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা ৩০টি দেশকে নির্বাচিত করে তাদের আগাম বার্তা কীভাবে দেওয়া যায় সে ধরনের প্রকল্পের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই)) পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে আসেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি।  

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ম্যামি মিজুটরি বলেন, আমি বাংলাদেশে দেখতে এসেছি তারা দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটুকু সক্ষম। বিশেষ করে তারা ঘূর্ণিঝড় কীভাবে মোকাবিলা করে। কারণ প্রতিনিয়ত জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। ১৯৭০ সাল থেকে বাংলাদেশ এসব দুর্যোগ মোকাবিলা করে মৃত্যুহার কমিয়েছে। বিশ্বের জন্য এটি বড় উদাহরণ। আমরা এদেশকে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে আরও সহযোগিতা করতে আগ্রহী। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জলবায়ু পরিবর্তন দিনে দিনে ঝুঁকির পর্যায়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে তা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি কীভাবে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করা যায় সেটি দেখার জন্য। আগামবার্তা কীভাবে দেওয়া যায় তা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তিনিও গুতেরেসের নির্দেশনা আছে। সারাবিশ্বের দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা ৩০টি দেশকে নির্বাচিত করে তাদের আগাম বার্তা কীভাবে পাওয়া যায় সে ধরনের প্রকল্পের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এ তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু সেগুলো পুরোনো। সেজন্য নতুন পদ্ধতি ব্যবহারে তাদের কীভাবে সহায়তা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। 

জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অনেক প্রকল্পেই জাতিসংঘ সহায়তা করে আসছে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানুষদের সহায়তার জন্য কাজ করছে জাতিসংঘ, বিশেষ করে এসব এলাকায় নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছি। এদেশে প্রতি বছরই বন্যায় প্লাবিত হয়। বাংলাদেশ সরকার বন্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জেনেছি। দরিদ্র ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে জাতিসংঘ।

এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, জাতিসংঘ বহুজাতিক সংস্থা হিসেবে আমাদের নানা ধরনের সহায়তা করে থাকে। আমাদের দেশে ঝড়, ভূমিকম্প ও আবহাওয়া সম্পর্কিত দুর্যোগ আসার আগে এর আগাম বার্তা নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে প্রশমন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতি খুবই ভালো। ৩০টি দেশকে তারা আগাম বার্তার প্রকল্পের জন্য বেছে নিয়েছেন। এ পদ্ধতিকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বা মানবসৃষ্ট যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় তারা সহায়তা করবে। আমাদের সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

এসআর/কেএ