হেফাজতের ঘাড়ে ‘অপশক্তির বন্দুক রাখার’ প্রমাণ পেয়েছে ডিবি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশে তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পেছনে অন্য ‘অপশক্তির’ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এ ঘটনায় দায়ের করা বেশ কয়েকটি মামলা তদন্ত করছে ডিবি। সোমবার (২৯ মার্চ) নিজ কার্যালয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশে যে তাণ্ডবলীলা চালানো হয়েছে, এটি নির্দিষ্ট কোনো দলের না। তাদের (হেফাজতে ইসলাম) ঘাড়ে বন্দুক রেখে অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা অপশক্তি শামিল হয়েছে বলে আমরা অনুমান করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা ফুটেজের মাধ্যমে অপশক্তি শামিলের প্রমাণও পাচ্ছি।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় অনেকেই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করেছে। তাদের চিহ্নিত করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব ঘটনার কয়েকটি মামলা তদন্ত করছে ডিবি, কয়েকটি দেখছে ডিএমপির অপরাধ তদন্ত বিভাগ। আমরা অভিযুক্তদের সিসিটিভি ও টেলিভিশনের ফুটেজ দেখে শনাক্তের চেষ্টা করছি। কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা অবনতিতে জড়িত থাকে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় করা ৬৮টি মামলা হয়েছে। সেগুলোর কোনোটিরই এখনও তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি।
এ বিষয়ে ডিবির এ যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘মামলার তদন্ত এগিয়েছে। খুঁটিনাটি প্রমাণের অপেক্ষায় তদন্ত এতদিন মুলতবি ছিল। আমরা সেগুলো গুছিয়ে এনেছি, দ্রুতই সেগুলো নিষ্পত্তির করা হবে।’
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ মিছিল করে হেফাজতে ইসলাম। সেখানে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হেফাজতের বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতেও বিক্ষোভ মিছিল করে মাদরাসা ছাত্ররা। সেখানে সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু। এ খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও বিক্ষোভে নামে হেফাজত। সেখানেও সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়।
হামলা, সংঘর্ষ ও মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) সারাদেশে বিক্ষোভ করে হেফাজত। রোববার (২৮ মার্চ) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে ইসলামপন্থি দলটি। হরতালে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে।
এআর/এফআর