কেডিএ’র প্লট বরাদ্দে পুকুরচুরি, আর্থিক ক্ষতি ১১ কোটি
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) ময়ূরী আবাসিক এলাকার ১৫টি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বরাদ্দ করা প্লটের মধ্যে ৯টিই কেডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কেডিএর নীতিমালা লঙ্ঘন করে এমন বরাদ্দে সরকারের প্রায় ১১ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটির তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালককে অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য সম্প্রতি কমিশন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগের তীর কেডিএর এস্টেট শাখার পরিচালক মো. বদিউজ্জামানের দিকে। কারণ তিনি ভারপ্রাপ্ত সচিব থাকাকালীন বোর্ড প্রধান হিসেবে প্লটগুলো বরাদ্দ দেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনেরও অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কমিশন থেকে অনুসন্ধানের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি জেনে আপনাকে বলতে হবে।
অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ সেই বদিউজ্জামানের অফিসিয়াল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জবাব পাওয়া যায়নি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৪ মে কেডিএর ৫৭৭তম বোর্ড সভায় ময়ূরী আবাসিক এলাকার ১৫টি প্লটের বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই সময় কেডিএতে সচিব পদটি ফাঁকা থাকায় সভা পরিচালনা করেন এস্টেট শাখার পরিচালক মো. বদিউজ্জামান। ১৫ প্লটের মধ্যে ৯টি কেডিএর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। সেই সভায় পাঁচ কাঠার একটি করে প্লট বরাদ্দ পান একজন সংসদ সদস্য, কেডিএর এস্টেট শাখার পরিচালক মো. বদিউজ্জামান, বোর্ড সদস্য রুনু রেজা ও খুলনার নিরালা এলাকার ব্যবসায়ী মো. ইকবাল খান। এছাড়া ৩ কাঠার প্লট বরাদ্দ পাওয়ার মধ্যে পুলিশ ও কেডিএ, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবাসিক প্লট বরাদ্দের নীতিমালায় বলা আছে, কোনো প্লট বরাদ্দের আগে কেডিএর বৈষয়িক শাখা থেকে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় আবাসিক, আবাসিক-কাম-বাণিজ্যিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প প্লট বরাদ্দের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। এ ছাড়া প্লট বরাদ্দের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ৫ শতাংশ কোটা রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু প্লট বরাদ্দে এসব নিয়ম মানা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, কেডিএর ৫৫৭তম বোর্ড সভাটি পরিচালনা করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. বদিউজ্জামান। ওই সভায় ময়ূরী আবাসিক প্রকল্পের প্লট বরাদ্দের কোনো অ্যাজেন্ডা ছিল না। এছাড়া ময়ূরী আবাসিকে প্রতি কাঠা জমির দাম ১৫ লাখ টাকা হলেও ওই সভার ১৫টি প্লটের জন্য প্রতি কাঠার দাম ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা করে। এতে সরকারের প্রায় ১১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
আরএম/এসএম