ঈদুল ফিতরের পর এবার কোরবানির ঈদেও রেলের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত ১৪ থেকে ১৮ জুন অগ্রিম টিকিট এবং ২২ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ফিরতি টিকিট বিক্রি করে রেল কর্তৃপক্ষ। এবারের ঈদে অনলাইনের মাধ্যমে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে টিকিট পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।

ঢাকায় বাস করা অনেক মানুষের ঈদের ছুটিতে নিরাপদে বাড়ি ফেরার ভরসা রেলপথ। প্রতিবছর তাই ঈদের আগাম টিকিট কাটতে রেলস্টেশনে রাত থেকে শুরু করে দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যেত। কিন্তু এ বছর ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় শতভাগ টিকিট অনলাইন ফ্ল্যাটফর্মে আসায় যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।

এ বিষয়ে রেল সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো এবারের ঈদেও শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় যাত্রীরা স্বস্তিতে টিকিট কাটতে পেরেছেন। ভোগান্তির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে টিকিট কালোবাজারিও বন্ধ করা গেছে।

তিনি দাবি করেন, এবার অগ্রিম ও ফিরতি টিকিট কাটার সময় সার্ভারে কোনো জটিলতা ছিল না। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ট্রেন স্টেশনে নিরাপত্তা ও টিকিট চেকিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
হুমায়ুন কবীর বলেন, অনলাইনে শতভাগ টিকিট পৌঁছে দিতে সফলভাবে কাজ করছে অনলাইন টিকিটিং প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’। দৈনিক বিপুল চাহিদার বিপরীতে ২৭ হাজার টিকিট বিক্রি করা কঠিন কাজ। তবে আমরা সবাই মিলে সেটি ভালোভাবেই করতে পেরেছি। 

রেল সচিব বলেন, গত ঈদে প্রথমবারের মতো শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়। সেসময় যে ভুল-ত্রুটি ছিল, সেগুলো সংশোধন করায় যাত্রীরা এবার স্বচ্ছন্দে ও স্বস্তিতে টিকিট কাটতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’ লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুবায়ের হোসাইন বলেন, যাত্রীদের সুবিধার্থে এবার অনলাইনে দুই ভাগে অগ্রিম টিকিট দেওয়া হয়। পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হয় সকাল ৮টা থেকে। আর পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়েছে দুপুর ১২টা থেকে। দুই ভাগ করে টিকিট বিক্রি করায় যাত্রীরা সহজে স্বাচ্ছন্দ্যে লগ ইন করা এবং টিকেট কাটার সুফল পেয়েছেন।

তিনি জানান, এবার ঈদে অগ্রিম টিকেট কেনার জন্য প্রতি ঘণ্টায় তাদের সিস্টেমে হিট এসেছে ৩ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি। রেলের টিকিটের জন্য এ যাবৎকালে সবচেয়ে বেশি হিট এসেছে এবার। এরপরও যাত্রীরা বেশ স্বচ্ছন্দেই টিকিট কাটতে পেরেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

‘সহজ’ জানায়, ঈদের সময় সার্ভারে যাত্রীদের চাপ সামলাতে নতুন নতুন সব আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নিজেদের প্রস্তুত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া বাড়তি যাত্রীদের উত্তম সেবা দেওয়ার জন্য ১৫০০ এর অধিক শক্তিশালী সার্ভার যুক্ত করা হয়েছে। ফলে অনলাইনে কম সময়ে টিকিট কিনতে পেরেছেন যাত্রীরা। 

উল্লেখ্য, ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ এই স্লোগানে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। একটি এনআইডি নিবন্ধন দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি আসন কেনা যায়।

এমএইচএন/কেএ