সাবেক স্ত্রীকে আবাসিক হোটেলে ডেকে এনে শ্বাসরোধ করে হত্যা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার রাশনূর শপিং কমপ্লেক্সের শাহিন আবাসিক হোটেলের ৬০৯ নম্বর রুমে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শাহিনুর বেগমকে (২২) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সাবেক স্বামী জুয়েল বেপারী পালিয়ে যান। পরে বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলা থেকে তাকে গতকাল রাতে গ্রেপ্তার করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার (২৩ জুন) মধ্যরাতে শাহিনুর বেগম ও জুয়েল বেপারী স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে শাহিন আবাসিক হোটেলে ওঠেন। এদিন সকালে ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই হোটেলের পঞ্চম তলার ৬০৯ নম্বর কক্ষে যায়। সেখানে ওই নারীকে মৃত অবস্থায় পায় পুলিশ। তখন ওই নারীর পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে যে মোবাইল নম্বর ছিল সেটিও ছিল ভুল। ঘটনার সিসি ফুটেজ দেখে ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় বরিশাল জেলার হিজলা থানার ৭ নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে গতকাল রাতে জুয়েল বেপারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি ওই নারীকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৩ জুন হোটেলে উঠে ওই নারীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সেখান থেকে পালিয়ে যান জুয়েল। পরে আমরা সিসি ফুটেজ দেখি এবং হোটেলের দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু ওই নম্বরে তাকে পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে আমরা ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করি এবং তার পরিবারকে খবর দেওয়া দেই। এরপর আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল রাতে বরিশাল জেলার হিজলা থানার ৭ নং ওয়ার্ডে তার নিজ বাসা থেকে অপারেশন স্যারের নির্দেশনায় তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।
মনির হোসাইন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল ওই নারীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন। ছয় বছর আগে তার সঙ্গে শাহিনুর বেগমের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে ১৩ মাস আগে শাহিনুর বেগমের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের ঘরে সুরাইয়া নামে চার বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহিনুর বেগম দুই মাস আগে নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে তিনি (জুয়েল বেপারী) ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। পরে শুক্রবার তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আসতে বলায় সেখান থেকে তারা দুজনে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। হোটেলে ওঠার পর তাদের দুজনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহিনুর বেগমের ওড়না দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করেন তিনি। পরে তার নড়াচড়া না পেয়ে দ্রুত হোটেল থেকে পালিয়ে যান জুয়েল।
এসআই আরও বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার সাবেক স্ত্রীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। তাকে গ্রেপ্তারের পর ওই হোটেলে প্রবেশের সময় পরিহিত শার্ট ও প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শাহিনুরের বাবা হাসান হাওলাদার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জুয়েলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে বিচারকের খাস কামরায় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
এসএএ/এফকে