চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. তারেক চৌধুরীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠা আনোয়ারা থানার সেই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক অফিস আদেশে তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

শুক্রবার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সুদীপ্ত সরকার।

এর আগে গত ১১ জুন ‘একই ঘটনায় দুই ধারায় মামলা, চবি শিক্ষককে ফাঁসাতে চান ওসি!' শিরোনামে ঢাকা পোস্টে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ঘটনায় জড়িত না হয়েও জামিন অযোগ্য মামলায় চবি শিক্ষককে আসামি করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

আরও পড়ুন : একই ঘটনায় দুই ধারায় মামলা, চবি শিক্ষককে ফাঁসাতে চান ওসি!

পরবর্তীতে ২০ জুন এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এতে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত প্রতিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাধীন হাইলধর ইউনিয়নের খাসখামা এলাকার গ্রামে চবি শিক্ষক তারেকের বাড়িতে ২৭ মে তারিখ রাত ৮টার দিকে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় দুষ্কৃতকারীরা বর্বরোচিতভাবে তার বসত ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং মূল্যবান জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার লুটপাট করে। উক্ত সন্ত্রাসী ও লাঠিয়াল বাহিনী মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘরে অবস্থানরত তার পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যসহ চারজনকে আহত করেছে৷ 

আরও পড়ুন : চবি শিক্ষককে মামলায় ‘ফাঁসালেন’ ওসি, শিক্ষক সমিতির প্রতিবাদ

'অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আনোয়ারা থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা হামলাকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে তাদের পক্ষ হয়েই চবি শিক্ষক মো. তারেকসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা রুজু করেছেন। যা ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অথচ ঘটনার সময় তারেক চৌধুরী চট্টগ্রাম শহরেই অবস্থান করছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে ঘটনার শিকার হওয়া শিক্ষক ও তার পরিবার আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তায় দিনাতিপাত করছেন।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনার তিন দিন পর, ৩০ মে হামলাকারীদের পক্ষাবলম্বন করে আনোয়ারা থানা পুলিশ ওই শিক্ষক এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩২৫ ও ৩২৬ ধারার মতো জামিন অযোগ্য গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত করে মিথ্যা মামলা রুজু করে। এটিকে চবি শিক্ষক সমিতি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইনের শাসনের পরিপন্থি বলে মনে করছে। চবি শিক্ষক ও তার পরিবারকে এভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। ওই শিক্ষক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার এবং শিক্ষকের বাড়িতে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের হস্তক্ষেপ কামনা করে শিক্ষক সমিতি।

এমআর/এসকেডি