কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ফের চালু হতে যাচ্ছে। দুই ধাপে উৎপাদনে ফিরছে কেন্দ্রটি। এর প্রথম ইউনিট আগামী ২৫ জুন এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২ জুলাই চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

এর মধ্যে প্রথম ইউনিট চালু হলে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক ৫২৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে পায়রা। কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিট চালুর পর থেকে ৭৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।

ইতোমধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪১ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে কয়লাবাহী জাহাজ দেশে এসে পৌঁছেছে। জাহাজ থেকে পায়রার কোলইয়ার্ডে কয়লা পৌঁছাতে সময় নেবে দুদিন। 

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে আগামী ৯ আগস্ট পর্যন্ত ১৭টি জাহাজ প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আসবে। জুলাই পর্যন্ত ১৩টি শিপমেন্টে যে পরিমাণ কয়লা আসবে তা দিয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পায়রার দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পরও ২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত থাকবে। এর পর ৯ আগস্ট পর্যন্ত আসবে আরও ৪টি শিপমেন্ট।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট পূর্ণ সক্ষমতায় চালাতে দৈনিক ১২ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। তবে পিডিবির চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন কমবেশি হয়। চাহিদা বেশি থাকলে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পায়রা।

এ প্রসঙ্গে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাবাহী জাহাজ ইতিমধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছে। উৎপাদন শুরু করতে দু-একদিন সময় লাগতে পারে। তাছাড়া আগস্ট অবধি কয়লার অর্ডার করা রয়েছে। সুতরাং উৎপাদনে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন দুপুর সাড়ে ১২টায় কয়লা সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়। এর আগে একই কারণে গত ২৫ মে একটি ইউনিট বন্ধ হয়েছিল।

বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করে। ডলার সংকটের কারণে আমদানি করা কয়লার প্রায় ৩৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বকেয়া জমে যাওয়ায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি। ওই কোম্পানিকে কয়লার দাম পরিশোধ করে সিএমসি। চুক্তি অনুযায়ী, সিএমসি কয়লা ক্রয়ের ৬ মাস পরে বাংলাদেশ অর্থ পরিশোধ করতে পারে। তবে ৬ মাস পার হয়ে গেলেও ডলার সংকটে বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি পায়রা কর্তৃপক্ষ। বড় অঙ্কের বকেয়া হওয়ায় চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কয়লা ক্রয়ে নতুন করে এলসি খুলতে সিএমসিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ কারণে কয়লা আমদানিতে জটিলতায় পড়ে বিসিপিসিএল। সরকার দ্রুততার সঙ্গে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করে পুনরায় কয়লা আমদানি শুরু করে।

ওএফএ/এমএ