প্রতিনিয়তই মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে : শামসুল আলম
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিয়তই মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই মেধা পাচার বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করবে।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ভবনে ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স ২০২২’ এর প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস ডিজি (চলতি দায়িত্ব) পরিমল চন্দ্র বসু। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন।
বিজ্ঞাপন
শামসুল আলম বলেন, এ জরিপের তথ্যানুযায়ী ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে জনসংখ্যার হার কিছুটা বেড়েছে। এটা কোভিডের কারণে হতে পারে। তবে এ বিষয়টি ভাবনার। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে। যেটা অপ্রত্যাশিত ছিল। এছাড়া আমাদের প্রজনন ক্ষমতা বেড়েছে। এর কারণ হতে পারে আমাদের দেশে যুব সমাজ। বর্তমান আমাদের যুবদের গড় হার ২৮ শতাংশ। কাজেই আমাদের প্রজনন ক্ষমতা বেশি হতে পারে বলে আমার মনে হয়।
তিনি বলেন, দেশের মেধা পাচার ব্যাপক হচ্ছে। পুঁজিবাজার থেকেও মেধা পাচার বেশি ভয়ঙ্কর হবে। মেধা চলে গেলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও স্মার্ট বাংলাদেশ কীভাবে করবো। মেধা পাচার আলোচনায় কম আসে। কিন্তু এটা আমাদের ভাবার বিষয়। এ মেধা পাচার ঠেকাতে আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
শামসুল আলম আরও বলেন, এই এসভিআরএস জরিপ থেকে আমরা ১৩৮টি তথ্য এবং এসডিজির ২৭ ইন্ডিকেটরের তথ্য পাবো। যার ফলে এই জরিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশু মৃত্যুর হার বেড়েছে। বিষয়টি নেতিবাচক হলেও আমাদের অনেক ইতিবাচক বিষয় হবে। এখনও দেশে বাল্যবিবাহ প্রায় ৪১ শতাংশ। এটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমার শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এসভিআরএস জরিপে দেখা গেছে, ২০২২ সালে দেশে মুসলমানদের সংখ্যা ৮৯ শতাংশ। যা ২০২১ সালেও ছিল ৮৯ শতাংশ। ২০২০, ২০১৯, ২০১৮ সালেও মুসলমানদের হার ছিল ৮৮.৪ শতাংশ। এছাড়া, ২০২২ এবং ২০২১ সালে অন্যান্য ধর্মের লোকের হার দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশ। যা ২০২০, ২০১৯, ২০১৮ সালে এ হার ছিল ১১.৬ শতাংশ।
প্রকল্প পরিচালক মো. আলমাস জানান, ২০২১ সালের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের গড় কিছুটা বেড়েছে। ২০২২ সালের চূড়ান্ত হিসেবে দেশের মানুষের গড় হয় ৭২.৪ বছর। যা ২০২১ সালে ছিল ৭২.৩ বছর এবং ২০২০ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭২.৮ বছর। এছাড়া, ২০২২ সালে দেশের পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০.৮ বছর। যা ২০২১ সালে ছিল ৭০.৬ বছর। এছাড়া, মহিলাদের গড় আয়ুও কিছুটা বেড়েছে। ২০২১ সালে মহিলাদের গড় আয়ু ছিল ৭৪.১ বছর। যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪.২ বছর।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বেড়েছে তালাকের হার। শহরের তুলনায় পল্লী এলাকায় এই স্থুল তালাকের হার বেড়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে তালাকের হার ১.৪ শতাংশ। যা ২০২১ সালে ছিল ০.৭ শতাংশ। এই তালাকের হার পল্লী এলাকায় ০.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.৪ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ০.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে তালাকের হার দাঁড়িয়েছে ১ শতাংশ।
এসআর/এসএম