স্থান পরিবর্তনে প্রাণ ফিরে পেল লিটল ম্যাগাজিন চত্বর
তরুণ লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের আড্ডায় বইমেলার যে চত্বর হয়ে থাকত প্রাণবন্ত, এবারের মেলার শুরুতে সেই লিটল ম্যাগাজিন চত্বর খাঁ খাঁ করছিল। অবশেষে প্রাণ ফিরে ফেল এই চত্বর।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বই প্রকাশের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল লিটল ম্যাগাজিন চত্বর। এটি মূলত স্বতন্ত্র চিন্তাধারা প্রকাশের একটি মঞ্চ। অমর একুশে বইমেলায় প্রতি বছরই লিটল ম্যাগাজিনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমির বহেড়াতলা এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশের আমতলার জায়গাটি। তবে এবার প্রথমবারের মতো লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থান পেয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বে পাশে জয়কালী মন্দিরের পেছনে।
বিজ্ঞাপন
এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রকাশক-লেখকরা। এ বছর লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরের বিষয়ে প্রকাশক-বিক্রেতাদের না জানিয়েই মেলার নকশা করা হয়েছে বলে দাবি তাদের। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর গত বছরের জায়গায় পুনর্স্থাপনের দাবিতে বইমেলায় স্টল বন্ধ রেখে ধর্মঘটও পালন করেন তারা। লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের সব স্টলে প্রকাশনা প্রদর্শনী ও বিক্রি বন্ধ রেখে সেখানে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিও পালন করতে দেখা যায় তাদের।
আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি লিটল ম্যাগাজিন স্থান পরিবর্তন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশের জায়গাটিতে নিয়ে আসে। পূর্বের স্থান ফিরে পাওয়ায় স্বরূপে ফিরেছে লিটল ম্যাগাজিন চত্বর। পাঠক-দর্শনার্থীরা আসছেন, বই-ম্যাগাজিন কিনছেন। স্বস্তি ফিরেছে লেখক-প্রকাশকদের মাঝেও।
‘দ্রষ্টব্য’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক কামরুল হুদা পথিক বলেন, ‘প্রকাশক বা সম্পাদক কারও সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই এই বছর বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তর করে একটা বিচ্ছিন্ন জায়গায় স্থাপন করেছিল। মূল মেলার দিকে পেছন দিয়ে একটি খুপরি ঘরের মতো করে লিটল ম্যাগাজিনের স্টলগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। আমরা তীব্র আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পর বাংলা একাডেমি স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়। আজকেই প্রথম আগের জায়গায় আসছি। বাংলা একাডেমি লিটল ম্যাগাজিনের জন্য জায়গা বরাদ্দ কম দিয়েছে, আরেকটু বেশি দেওয়া উচিত ছিল। আশা করি, লিটল ম্যাগাজিনের কয়েকদিনের মধ্যে জমে উঠবে।’
‘হালখাতা’ সম্পাদক শওকত হোসেন বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমি লিটল ম্যাগাজিন চত্বরকে মেলার মূল প্রাঙ্গণে জায়গা দিয়েছে। কিন্তু এ বছর প্রথমে এমন একটা জায়গা দিয়েছিল যেখানে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ভুল করেও দেখতে আসতেন না। তবে সমাধান দেওয়ায় বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ। এখন অনেকটা আগের আমেজ ফিরে পেয়েছে। লিটল ম্যাগাজিনকে কোনোভাবেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।’
‘আনর্ত’ ম্যাগাজিনের বিক্রয়কর্মী রিফাত বলেন, ‘লিটল ম্যাগাজিনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রথমে যে স্থান দিয়েছিল তার তুলনায় এখন ভালোই বলা যায়। পাঠক-দর্শনার্থীরা এখন মোটামুটি আসছেন। তবে করোনার কারণে এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় জমছে না।’
উল্লেখ্য, লিটল ম্যাগাজিনকে ১৩৫টি স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি পাঁচটি উন্মুক্ত স্টলসহ ১৪০টি স্টল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।
এইচআর/এফআর