ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বিপদসীমায় পৌঁছে গেছে
অপরিকল্পিত নগরায়ন রাজধানী ঢাকার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে ৩ কোটির অধিক জনসংখ্যার চাপ। যার ফলে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বিপদসীমায় পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেন পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার।
রোববার (১১ জুন) রাজধানীর ভাটারায় টেক্সটস সেন্স মিলনায়তনে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারে চাই সচেতনতা শীর্ষক সভার তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সবুজ আন্দোলনের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, ঢাকায় দিনে ৩০০ কোটির অধিক লিটার পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। মাটির নিচ থেকে অবিরাম পানি উত্তোলন করায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে। ঢাকায় প্রতি বছর ছয় ফুট করে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ঢাকার ১০টি জোনে গভীর নলকূপ ৯৩০টি। ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পানির চাহিদা।
তিনি আরও বলেন, চাহিদা মেটাতে বসানো হচ্ছে গভীর নলকূপ। ঢাকা ওয়াসা পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করছে। ওয়াসার পানির ৬৭ শতাংশই মাটির নিচের। প্রতিনিয়ত পানি পেতে গভীর থেকে গভীরে নলকূপ স্থাপন করতে হচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। গুরুত্ব দিতে হবে ভূ-উপরিস্থ পানি পরিশোধন করে সরবরাহে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, আগামীতে পানি সংকট নিরসনে ৭০ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। নদীর পানি শোধনের মাধ্যমে রাজধানীর মানুষের চাহিদা মেটাতে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পানির গুণগত মান, টেকসই, গণমুখী ও পরিবেশবান্ধব কিনা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বাইপাস ক্যানাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
বিভিন্ন তথ্য মতে, ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার গভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ৫১৯টি। ১০ বছর আগে একটি গভীর নলকূপ বসাতে খরচ হতো ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা। এখন খরচ হয় ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অনেকটা ব্যর্থ ঢাকা ওয়াসা। ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার পরিণত রাখতে সরকারসহ সাধারণ জনগণকে সচেতন হতে হবে।
সবুজ আন্দোলনের ভাটারা থানার আহ্বায়ক ওলি উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলনের অর্থ পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন রুপা, সংগঠনের উপদেষ্টা ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মেজবাউদ্দীন জীবন চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা তিতাস মোস্তফা, প্রচার সম্পাদক আতাউল গনি লাভলু প্রমুখ।
এএসএস/ওএফ