মার্কিন নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি, যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের চলাফেরা নিয়ে যে সতর্কতা জারি করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তার পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক। প্রায় সাত থেকে আট মাস পরে নির্বাচন হবে। আর ইতোমধ্যে মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের সতর্কবার্তা দিয়েছে।
সোমবার (২২ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাতার সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
কেন মার্কিন দূতাবাস দেশটির নাগরিকদের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কারণ দূতাবাস থেকে জানতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন মন্ত্রী। মোমেন বলেন, প্রায় সাত থেকে আট মাস পর নির্বাচন হবে। আর ইতোমধ্যে মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের সতর্কবার্তা দিয়েছে। এটা তাদের জিজ্ঞেস করেন, কেন তারা এটা দিয়েছে? আমাদের দেশে কোনো ধরনের হত্যা নাই। রাস্তাঘাটে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না, কোনো সভা বা মিটিংয়ে কেউ কাউকে গুলি করে মারে না। আমাদের দেশে অজ্ঞাতভাবে রাস্তাঘাটে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় জিরো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আর মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে তারা (বাংলাদেশিরা) এতো ক্ষেপবে কেন? কোনো অন্যায় তো মার্কিন নাগরিকরা করছে না। এটা খুবই অদ্ভূত, তারা কেন উদ্বিগ্ন, এটা তাদের জিজ্ঞেস করুন।
বর্তমান সময়ে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উন্নত বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার ভাষ্য, ‘ইদানিং আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতো ভালো হয়েছে যে, কোথোও কোনো অপকর্ম হলে পুলিশ সত্যি সত্যি তাদের ধরে নিয়ে আসে; অল্প সময়ের মধ্যে। অভূতপূর্ব উন্নয়ন। তারা খুব ভালো কাজ করছে। খারাপ কিছু হওয়ার মতো কোনো কারণ আমাদের এখানে নেই, যার জন্য অগ্রিম একটা সতর্কবার্তা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, বরং কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে গেলে সতর্ক করা উচিত। সেখানে শপিং মলে, স্কুলে, বারে গেলে সতর্ক থাকতে হবে। এটা খুব প্রাসঙ্গিক। তবে এটা তাদের ব্যাপার।
রোববার মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ‘ডেমনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’ শিরোনামে প্রচারিত ভ্রমণ সতর্কবার্তায় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকাসহ সারা দেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা ওই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকবে। এসব কর্মসূচি আরও তীব্র হতে পারে। এ সময় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে হবে। মনে রাখা উচিত, যেকোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সংঘর্ষে পরিণত হতে পারে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ এড়িয়ে চলুন। যেকোনো বড় সমাবেশের আশপাশে সতর্কতার সঙ্গে পথ চলুন।
এছাড়া স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের বিষয়ে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে হবে। স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের পরিবেশ পরিস্থিতির বিষয়ে সচেতন থেকে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে নজর রাখতে হবে।
এনআই/এসএম