প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, যেসব এলাকায় গ্যাসের সমস্যা বেশি সেসব এলাকায় ভোলার গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি সংকটও দূর হবে।

রোববার (২১ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

চুক্তির আওতায় ভোলার উদ্বৃত্ত ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট (দৈনিক) গ্যাস সিএনজি আকারে পরিবহন করে তিতাস গ্যাসের আওতাধীন এলাকায় সরবরাহ করা হবে। ইন্ট্রাকো প্রতি ঘনমিটার ১৭ টাকা দরে কিনে ৪৭.৬০ টাকা দরে বিক্রি করবে। এ দর নিয়ে রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন।

উপদেষ্টা বলেন, সমকালীন সমস্যাকে মিটিয়ে এগিয়ে যাওয়াই সরকারের বড় লক্ষ্য। আমরা যদি যৌথভাবে কাজ করি তাহলে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব। যদি কনসালটেন্ট নিয়োগ করতাম, তাহলে তারা অনেকদিন সময় লাগাত। তবে ইন্ট্রাকো দ্রুত সময়ের মধ্যে তা করতে পেরেছে। নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জগুলো সামনে আসবে, সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আজকের সমস্যার উৎস আমরা নই, ইউরোপে শুরু হয়েছে। এর ফলে জ্বালানির দাম বেড়ে গেল, সারের দাম বেড়ে গেল আর আমরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভোলা এলাকায় বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভোলায় ৩ টিসিএফের কাছাকাছি গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে।

ভোলায় আবাসিকে গ্যাস সরবরাহ দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোলার মানুষের দাবি থাকাটা স্বাভাবিক। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, একে সিএনজি আকারে আনার বিষয়টি সরকারি সিদ্ধান্ত। আমরা দৈনিক কমবেশি ২২০০-২২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করছি। এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে ৪ হাজারের কাছাকাছি। আমরা দুইটি এফএসআরইউ দিয়ে দৈনিক এক হাজার আমদানি করতে পারি। তারপরও এক হাজারের মতো ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।  ঢাকার আশপাশ ও টাঙ্গাইল এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান স্বল্পচাপ সমস্যায় ভুগছে। যেখানে স্বল্পচাপ বিরাজ করছে সেখানে দেওয়া হবে এ গ্যাস।

তিনি বলেন, আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ৫ মিলিয়ন আনতে সক্ষম হব, পরবর্তীতে আরও ২০ মিলিয়ন ঘনফুট আসবে। ভোলা এলাকায় ২.০৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে।

সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভোলা গ্যাস ফিল্ডে দৈনিক ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। সেখানে সব গ্রাহক মিলে চাহিদা রয়েছে ৯২.৩২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। গ্রাহক না থাকায় ২৭.৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকছে। বাপেক্সের পত্র মারফত জানা গেছে, ২০২৪-২৫ সালে উৎপাদন ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।  

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল খালেক মল্লিক ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলী।

ওএফএ/এফকে