রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কে গাছ কাটার প্রতিবাদে এবং ৫ দফা দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (নগর ভবন) ঘেরাও কর্মসূচি দেন পরিবেশবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

রোববার (২১ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে গাছ কাটার প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে নগর ভবন অভিমুখে রওনা হয় আন্দোলনকারীরা। কিন্তু পুলিশি বাধায় বঙ্গবাজার মোড়ে কর্মচারী হাসপাতালের সামনে থামতে হয় তাদের। এসময় আন্দোলনকারীরা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করলে ওখানে অবস্থান করার ঘোষণা দেন। তবে শেষ পর্যন্ত তারা মেয়রের দেখা পাননি।

দক্ষিণ সিটির মেয়রের দেখা না পেলেও সংস্থাটির নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। মেয়রের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো নিয়ে কথা বলারও আশ্বাস দেন তিনি। আর তার আশ্বাসে ফিরে যান আন্দোলনকারীরা। তবে, দ্রুততম সময়ে দাবি মেনে না নেওয়া হলে পরবর্তীতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানান তারা।

বেলার নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সড়ক বিভাজক গাছ কাটার কোনও যুক্তি নেই দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের। যুক্তি নেই বলেই তারা পিছিয়ে পড়েছে। আমাদের যুক্তির মোকাবেলা করছে না তারা।

কর্মসূচিতে পুলিশের বাধার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একটা কর্মসূচি নিয়ে এসেছি, পরবর্তী কি সিদ্ধান্ত হবে সেটা এখনি বলতে পারছি না। তবে আমাদের যে আন্দোলন এটা চলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত গাছ কাটা থেকে তারা সরে না আসে। কেবলমাত্র সাত মসজিদ রোড নয়, যেদিকে তাকান কিছু হলেই গাছ কাটে। ফলে এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

আন্দোলনকারীদের দাবি প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, উন্নয়ন কাজে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। নগরের যে কোনও উন্নয়ন কাজ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী, নগর পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়। যেসব গাছ কাটা হয়েছে সেখানে নতুন করে গাছ লাগানো হবে। এছাড়া আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো মেয়রের নিকট নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তার এই বক্তব্যের পর আন্দোলনকারী প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক বলেন, আমরা দাবিগুলো জমা দিয়েছি, মেয়রের উত্তরের অপেক্ষা করবো। আন্দোলন চালিয়ে যাবো যতদিন না গাছ কাটা বন্ধের ঘোষণা না আসবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নগর পিতা আমাদের সঙ্গে দেখা করল না। এই লজ্জা কার? উনি দাবি করেন জনগণের ভোটে এসেছেন, আমরা জানি সেই ভোটের নির্বাচন কেমন হয়েছিল। এটা তিনি আমাদের চেয়েও ভালো জানেন। তারপর উনাকে সম্মান জানিয়ে স্মারকলিপি পেশ করেছি। কিন্তু তিনি একবারের জন্য আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। তিনি একবার খবর নেওয়া, যোগাযোগও করেনি। এই নাকি গণতন্ত্র; এই নাকি জবাবদিহিতা।

এএইচআর/এমজে