ছবি : সংগৃহীত

প্রত্যেক বছর অসচ্ছল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাওয়ার সুযোগ দেয় সরকার। সেই সুযোগে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, মসজিদের ইমামসহ ২৫০ থেকে ৩০০ ব্যক্তি প্রতিবছর সরকারি খরচে হজে যেতেন।

হজের খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবার রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাওয়ার লাগাম টেনেছে সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার মাত্র ২৩ জন রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাচ্ছেন। তবে তাদের বিমান ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

শনিবার (২০ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সরকারি খরচে হজ পালনকারীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী এ তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন : শুধু মক্কায় যাওয়ার খরচ থাকলে হজ ফরজ হবে?

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো তালিকাসহ প্রধান হিসাব রক্ষণ ও অর্থ কর্মকর্তার কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে পাওয়া তালিকায় ২৩ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে সরকার ঘোষিত প্যাকেজ মূল্যের মধ্যে বিমান ভাড়া ছাড়া অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পাঠানোর সম্মতি দেওয়া হলো।

রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনের জন্য মনোনীতদের বিমান টিকিট বাবদ ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা দিতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনকারী ব্যক্তিরা বিমানের ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে সম্ভাব্য আগামী ১০ জুন (আগে বা পরে) সৌদি আরব যাবেন। একইভাবে বিমানের ফ্লাইট পাওয়া সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুলাই বাংলাদেশে ফিরবেন তারা।

আরও পড়ুন : হজ কবুলের জন্য যেসব মানতে হবে

রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনকারী ব্যক্তিরা সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী হিসেবে সরকারের সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্যে উল্লেখিত সেবা পাবেন। তারা দৈনিক ভাতা বা অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি পাবেন না, তবে খাওয়া খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা হজে যাওয়ার আগে হজ অফিস থেকে দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনকারী প্রত্যেক হজযাত্রীকে কোরবানি খরচ বাবদ আনুমানিক এক হাজার সৌদি রিয়াল আলাদাভাবে সঙ্গে নিতে হবে বলেও জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন। তবে এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় কোটা পুরোপুরি পূরণ করা যায়নি। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা।

আরও পড়ুন : কম খরচে আসছে ‘আজিজিয়া হজ’ প্যাকেজ

জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় খরচে হজে এবার ব্যয়সংকোচনের নির্দেশনা রয়েছে। এটা জানার পরও ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। এ থেকে ২৩ জনকে চূড়ান্ত করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাচ্ছেন যারা 

ঢাকার বড় মগবাজারের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মোল্লা ও তার স্ত্রী আফিয়া হোসেন, রংপুরের মো. বাদশা আলমগীর, জামালপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল গফুর ও তার স্ত্রী জোবাইদা বেগম, ঢাকার শেরেবাংলা নগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুস খান, রংপুরের মো. আব্দুল কায়েম মিয়া, মাগুরা সদরের এস এম ফরিদ উজ-জামান ও তার স্ত্রী দিলশান আরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকের গোপনীয় সহকারী মো. রাশেদুন নবী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসি মেকানিক মো. ইউসুফ আলী ও তার স্ত্রী জান্নাত আরা রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাবেন।

এছাড়া রাষ্ট্রীয় খরচে আরও হজে যাবেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আরবরিকালচারের মালী সাহেব আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংলগ্ন স্টাফ কোয়ার্টার্সের সখিনা আক্তার, গোপালগঞ্জের মো. এনামুল হক শেখ, গুলশানের গাজী শাহাদাৎ হোসেন, কুমিল্লার মো. নুরুল ইসলাম, রাজধানীর উত্তর আদাবরের অধ্যক্ষ (অব.) পিএম মনসুর রহমান, গাইবান্ধার মো. নুরুল হোসেন খন্দকার, ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীর জামাল উদ্দিন মো. আকবর ভূঁইয়া, জয়পুরহাটের দেওয়ান মাহবুবার রহমান এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শাহাদাৎ শেখ।

এনএম/এসকেডি