প্রতিরক্ষা খাতের চুক্তি জাপান-বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা/ ছবি : সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টোকিও সফর বাংলাদেশ ও জাপানের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সমন্বিত অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছে। এ সফরকে কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে একটা অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সামনের দিনগুলোতে জাপানের আরও সহযোগিতা মিলবে এবং কৌশলগত বন্ধু হিসেবে দেশটির সমর্থন পাওয়া যাবে।

তবে একই সঙ্গে এই সফর ঘিরে কিছু প্রশ্নও সামনে এসেছে। যেমন প্রশ্ন এসেছে চীনকে একপাশে রেখে বাংলাদেশ কি জাপান-যুক্তরাষ্ট্র জোটের দিকে বেশি ঝুঁকে যাচ্ছে? বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কূটনীতি কি নিরপেক্ষতার আবরণ ভেঙে বিশেষ কোনো দিকে মোড় নিচ্ছে? 

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষকদের বক্তব্য ও বিশ্লেষণ জানার চেষ্টা করেছে ঢাকা পোস্ট।

জাপানে দুই শীর্ষ নেতা শেখ হাসিনা ও ফুমিও কিশিদার কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঘোষণাকে নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশদারিত্বে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের বাইরে বড় পরিসরে আলাপ-আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে। এতে আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক বিভিন্ন বিষয়ে উভয়পক্ষ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আলাপ করার সুযোগ পাবে।

আরও পড়ুন : সব হারিয়েও প্রাণে বেঁচে ফেরার স্বস্তি তাদের

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিরক্ষা খাতের চুক্তি দু’দেশের সম্পর্কে একটা নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। উভয়পক্ষ চলমান সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। এ সফরে অর্থনৈতিক প্রাপ্তিকে বড় করে দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সম্মত হয়েছে জাপান। জাপান এখানে বিনিয়োগ বাড়ালে অন্যরাও এগিয়ে আসবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ৩০ বিলিয়ন ইয়েন সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন। কানেকটিভিটি কেন্দ্রিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিকে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়েও দুই দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কূটনীতিক বলেন, আঞ্চলিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোর অধীনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ঠিক রেখে দু’দেশ কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সেটি বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে জাপানের রাজনৈতিক সমর্থনের বিষয়টি কিন্তু খুব জরুরি।

চার দিনের সফরে গত ২৫ এপ্রিল জাপান যান প্রধানমন্ত্রী। সফরের দ্বিতীয় দিন ২৬ এপ্রিল টোকিওতে ফুমিও কিশিদার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে বসেন তিনি। বৈঠকে দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সমন্বিত অংশীদারিত্ব থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। এছাড়া শীর্ষ বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে ৮টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করা হয়।

হাসিনা-কিশিদার শীর্ষ বৈঠক নিয়ে ৯ পাতার যৌথ বিবৃতিতে আঞ্চলিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক কাঠামোর অধীনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দুই দেশ সহযোগিতার বিষয়ে একমত পোষণ করে। অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকে উভয়পক্ষ সম্মত হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন : শ্রমবাজার নিয়ে জটিলতার অবসান চাইবে বাংলা‌দেশ

বিবৃতিতে কানেকটিভিটির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়- মাতারবাড়িতে রোড, রেল ও মেরিটাইম কানেকটিভিটি বৃদ্ধির জন্য বড় পরিকল্পনা নিয়েছে জাপান। সেজন্য দুই হাজার কোটি ডলারের বৃহৎ মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড অবকাঠামো নিয়ে কাজ করছে দুই সরকার। এটি দ্রুত করার বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।

এর বাইরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডেশন, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং সাইবার সিকিউরিটি ও আইসিটি উন্নয়ন বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করার কথা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে সংলাপের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বিবৃতিতে ইউক্রেনের মানুষের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর সফল হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সফরে যা কিছু অর্জনের আশায় ছিল ঢাকা, তার সব অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে যে চুক্তি হয়েছে তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ মনে করেন, জাপানের সঙ্গে সামরিক খাতে যে চুক্তি হলো সেটি দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। জাপান ইদানীং অস্ত্র তৈরি করছে। সেখানে বাংলাদেশ সুবিধামতো অস্ত্র নিতে পারবে, সে সম্ভাবনা তৈরি হলো। জাপান নতুন করে বাংলাদেশে আরও বেশি সহযোগিতা করতে চাইছে। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের যে চ্যালেঞ্জ আছে সেটি হচ্ছে, বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতে চায়। উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা প্রয়োজন, সেই কৌশলে বাংলাদেশ সামনে এগোচ্ছে। সেক্ষেত্রে জাপান থেকে সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন : সম্পর্ক নতুন মাত্রায় যুক্ত করছে বাংলাদেশ-জাপান

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার তথা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অতীতে বন্ধু দেশ জাপানকে সেই অর্থে কথা বলতে দেখা যায়নি। তবে সাবেক জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি গত বছরের শেষের দিকে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করায় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে দুই দেশের সম্পর্ক।

তবে প্রধানমন্ত্রীর সফরের কারণে ওই বিষয়টিও আপাতত মিটে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর টোকিও সফরের পাঁচদিনের মাথায় ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। কিমিনোরি তার পূর্বসূরি ইতো নাওকির করা মন্তব্য থেকে ভিন্ন পথে হাঁটেন। রাষ্ট্রদূত নির্বাচনকে বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা জানান।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, সফরের মূল লক্ষ্যই ছিল অর্থনৈতিক। আমাদের কিছু বাজেট-সহায়তা দরকার। এ সফরে সেটা মোটামুটি কিছুটা পাওয়া গেল। এর বাইরে রয়েছে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ। আমাদের এখানে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। সেখানে জাপানিদের উৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে এবং যথেষ্ঠ সাড়া পাওয়া গেছে। এটাকে কাজে লাগাতে হবে। কেননা, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অনেকে আসতে চায়। কিন্তু পরে পিছিয়ে যায়।

অধিক জাপানি বিনিয়োগের জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসনের পরামর্শ দেন এ অর্থনীতিবিদ। তার ভাষ্য, আমাদের যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে, বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করতে হয় বা পয়সা চাওয়া হয়, এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলোতে বিদেশিরা অভ্যস্ত নয়। এ জায়গাটা যদি আমরা দূর করতে না পারি তাহলে আমরা কিন্তু বিনিয়োগটা পাব না। হয়তো কিছু আসবে কিন্তু সেভাবে আসবে না। সম্ভাবনাটা ভালো আছে, কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। বর্তমানে যে অবস্থা তাতে কিন্তু হবে না। পদে পদে বাধা।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ভারতের সেভেন সিস্টার্সকে লক্ষ্য করে ভারত ও বাংলাদেশকে নিয়ে জাপান যে বিনিয়োগ করবে এটা একটা নতুন দিক। এটা কার্যকর করা গেলে আমাদের বিনিয়োগ বাড়বে। মাতারবাড়ি বন্দরটাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেটা জাপানের একটা লক্ষ্য। বন্দরের কেপাসিটি বাড়ানো না গেলে আমাদের বন্দরের সার্থকতা হবে না। তাই এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।

ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের কৌশলকে সন্দেহের চোখে দেখে চীন। জাপানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় বাংলাদেশের সম্পর্ক গড়াকে কেন্দ্র করে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়ার বিষয়টি সামনে আসছে। তবে বিশ্লেষকরা চীনের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন।

তারা বলছেন, পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য কূটনীতি বজায় রাখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আইপিএসের আউটলুকে অর্থনৈতিক দিকটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ভবিষ্যতে নিরাপত্তা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে যে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ কৌশলে সংঘাত থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ বলেন, এ সফরে এমন ইঙ্গিত নেই যে বাংলাদেশ জাপানের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে, আর চীন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাপানে যাওয়ার আগের দিন বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক প্রকাশ করেছে। আমি মনে করি এটা খুব সুচিন্তিতভাবে করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, কী ধরনের ইন্দো-প্যাসিফিক দেখতে চায় বাংলাদেশ। আমরা ফ্রি অ্যান্ড ওপেন আইপিএসে সমর্থন করলাম এবং সঙ্গে ইনক্লুসিভ যোগ করলাম অর্থাৎ সবার সমৃদ্ধির কথা বললাম। আমরা কারো বিরুদ্ধে যাওয়ার পক্ষপাতি নই। কাউকে বাদ দিয়ে আমরা কিছু করতে চাই না।

চীনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এ কূটনীতিক বলেন, বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় স্বার্থে। কোনো প্রজেক্টের ক্ষেত্রে যে দেশ প্রস্তাব দিচ্ছে, জাতীয় স্বার্থে উপযোগী যেটা, সেটা গ্রহণ করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারত বা কোরিয়া সবার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক। আমাদের কারও পক্ষে যাওয়া বা কারও কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সত্যিকার অর্থে সেরকম কোনো চাপও নেই। তবে একেবারে যে নেই সেটা বলা যাবে না। সবাই চায় আমরা তাদের সঙ্গে থাকি, যেন তাদের দল ভারী হয়। কিন্তু আমরা বলছি, আমরা সবার সঙ্গে আছি।

এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদের ভাষ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক জোটে যোগ দেওয়া নিয়েই মূলত ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা বা জটিলতা তৈরি হয়েছে। জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক তৈরির কারণে আমেরিকাসহ জাপানের যে জোটটা ওই জোটে বাংলাদেশ ঝুঁকে যাচ্ছে, এটা ভাবা ঠিক হবে না। আইপিএসের আউটলুকে অর্থনৈতিক দিকটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। আমি মনে করি, বাংলাদেশ যেখান থেকে এ সুবিধা পাবে সেদিকে যাবে। আর ভবিষ্যতে নিরাপত্তা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে যে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ কৌশলে সংঘাত থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে।

এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, যারা চীনের সঙ্গে সম্পর্কটা বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভাবেন, তারা জাপানের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন মাত্রাটাকে একটু অন্যভাবে দেখছেন। তবে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় দেখলে আমরা বলতে পারি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়লেই কেউ দূরে সরে যাচ্ছে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না।

এনআই/জেডএস