ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিপথ কোন দিকে
বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোখা’। এই ঘূর্ণিঝড় কোথায় আছড়ে পড়তে পারে তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদরা। এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না জানালেও ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস মনে করছে, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে তেমন পড়বে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য জানায়নি।
বিজ্ঞাপন
ভারতের আবহাওয়া অফিস কয়েকটি বিদেশি মডেলের সূত্রে জানিয়েছে, মোখা মিয়ানমার বা মিয়ানমার সংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ওয়েবসাইটে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত পাতায় এ মডেলগুলোর পূর্বাভাস বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এমনটি হলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে খুব একটা পড়বে না বলে ধারণা তাদের।
তবে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা গণেশ দাস বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, মডেলগুলোর পূর্বাভাস উল্লেখ করা হলেও এখনো মোখা কোন দিকে যাবে সেটা তারা বলছেন না। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার পর তা জানানো হবে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে শনিবার লঘুচাপ ও রোববার নিম্নচাপ তৈরি হবে।
এই কর্মকর্তা বলেন, মডেলের পূর্বাভাস অনেক সময়ই মেলে না, যা বলা হয় বাস্তবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ হয়ে যায় অন্যরকম। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত যেকোনো জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। আপাতত বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতির ওপর সারাক্ষণ বিশেষ নজর রাখছে আবহাওয়া অফিস।
ভারতের আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংক্রান্ত মডেলে বলা হচ্ছে, মোখা অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হতে পারে। অধিকাংশ মডেল অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পর বুধবার পর্যন্ত এটি উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগোবে। তারপর তা বাঁক নেবে উত্তর-পূর্ব দিকে। একটি মডেলে জানানো হয়েছে, মোখা দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে এগিয়ে শেষ পর্যন্ত আরব সাগরে যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি কোন দিকে যাবে সেটা বায়ুমণ্ডলের একাধিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। সেই পরিস্থিতিগুলোর পরিবর্তনও হয়। তাই গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সময় লাগে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আবহাওয়ার ইউরোপিয়ান মডেল অনুসারে ১২ মে দুপুর ১২টার পর কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে আবহাওয়ার আমেরিকা মডেল বলছে, ১৩ মে দুপুর ১২টার পর উত্তর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও ভোলা জেলার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলের পূর্বাভাসের মধ্যে পার্থক্য কমে এসেছে। এই সময়ে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র স্থলভাগে আঘাতের সময় প্রায় ১ দিন এগিয়েছে। তবে দুটি মডেলের মধ্যে স্থলভাগে আঘাতের সময়ের পার্থক্য ১৮ ঘণ্টা রয়েছে, এখন যা প্রতিদিন কমতে থাকবে।
/এসএসএইচ/