ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
তিন রাত দুই দিন সাগরে ভাসার পর ভারতের কারাগারে
আমরা এক ট্রলারে ১৯ জন ছিলাম। ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর আমাদের ট্রলার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে। একেকটা ঢেউ ২০-২৫ ফুট উচ্চতার আমাদের ট্রলারে আঘাত করে। এক পর্যায়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
এভাবেই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ভয়াবহতা বর্ণনা করছিলেন ভারত থেকে উদ্ধার হওয়া জেলে মোহাম্মদ দুলাল। আজ (শনিবার) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সেই দিনের কথা জানিয়ে দুলাল আরও বলেন, আমরা ৬ জন একটা কলাগাছ ধরে ভেসে ছিলাম। পরনে একটা হাফপ্যান্ট ছাড়া আর কোনো কাপড় ছিল না। চোখের সামনে চারজন মারা যায়। তিন রাত দুইদিন এভাবেই ভেসেছিলাম। এরপর আমাদের ভারতের জেলে নৌকা উদ্ধার করে। একেবারে মরতে মরতে বেঁচে ফিরেছি।
এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ছাবেরা ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ আহমেদপুর, চরকলমী ও আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের ১৫ জেলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন। স্বজনদের হারিয়ে ১৫টি পরিবার শোকের সাগরে ভাসতে থাকে। নিখোঁজ ১৫ জন জেলে ভারতের সীমান্তে পৌঁছালে ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কারাগারে পাঠায়। একটি নির্ভরযোগ্য সংবাদের ভিত্তিতে আমি বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদের ভারত থেকে বাংলাদেশে আনার ব্যাবস্থা করি। ছাবেরা ফাউন্ডেশন আমার মায়ের নামে করা। এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উদ্ধারকৃত জেলেদের পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এতগুলো মানুষের পুনর্বাসনের জন্য ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি সরকার ও দাতা সংস্থার সহযোগিতা প্রয়োজন।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাবেক সচিব ও ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন আরও জানান, ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে একটি এতিমখানা ও বড় স্কুল গড়ে তোলা হয়েছে।
এনআর/এনএফ