টানা দশ বছর ৪১ দিন দায়িত্ব পালন শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবন ছাড়লেন দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সফল রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব শেষ করে পুরোদমে অবসরে গেলেন তিনি। অবসরের পর কী করবেন সদ্য সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধান, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন নিজেই। জানালেন অবসরের সময়টুকু তিন জায়গায় কাটাতে চান। তবে সবচেয়ে বেশি সময় কাটাবেন হাওরে।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) বঙ্গবভন থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের পর রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা ‘রাষ্ট্রপতি লজে’ ওঠেন তিনি। নিকুঞ্জের বাসার সামনে গাড়ি থেকে নেমেই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আবদুল হামিদ।

তিনি প্রথমেই সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার যেটুকু সফলতা এজন্য আমি সমগ্র দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার ওপর দেশবাসীর দোয়া ছিল। আমার জেলা, আমার এলাকার মানুষেরও দোয়া ছিল। বিশেষ করে আপনাদের প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমি বিভিন্ন সময়ে যাই বলেছি, সেটাকে টুইসট (বিকৃত) না করে সত্যিকারভাবে প্রকাশ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে আমি এটাও বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেভাবে মোটামুটি ফ্রি-লি কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন বা আমার কাজের ব্যাপারে কোনোরূপ বাধা সৃষ্টি হয়নি, এজন্য আমি তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি রাষ্ট্রপতি ছিলাম, তবে আমি নিজেকে সবসময়ই দেশের সাধারণ মানুষ বলেই মনে করি। আমি সারাজীবন রাজনীতি করেছি, সেটা এদেশের মানুষের কল্যাণে এবং আমি চেষ্টা করেছি যেন এদেশে সুষ্ঠু রাজনীতি প্রবর্তন করা যায়। সেটাতে সফল হয়েছি, একথা বলতে পারব না। তবে আমার চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। আমি আশা করি অদূর ভবিষ্যতে এদেশে সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকবে এবং সুষ্ঠু রাজনীতি অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে। এর মাধ্যমে এদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আরও এগিয়ে যাবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি দেশের মানুষের কল্যাণ চাই। জনগণ ভালো থাকুক, সুখে থাকুক এবং সর্বদিক থেকে তারা ভালো থাকুক।’

কোন জিনিসগুলো আপনি মিস করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আজকে কেবল বের হলাম। ভবিষ্যতে আপনারা সময় নিয়ে এলে বিস্তারিতভাবে কথা বলা যাবে। তবে অবসরকালীন সময়ে আমি সবচেয়ে বেশি হাওর এলাকায় থাকার ইচ্ছা। এরপর ঢাকাতে এবং কিশোরগঞ্জে সময় দেবো। অবসরের সময়টুকু আমি তিনটা ভাগে ভাগ করতে চাই। একটা হলো ঢাকা, দ্বিতীয়টা কিশোরগঞ্জ এবং হাওর এলাকায়। আমি চেষ্টা করবো হাওর এলাকায় বেশি থাকার। আমার গ্রহণযোগ্যতার পেছনে মিডিয়ার অবদান কোনোদিন অস্বীকার করতে পারবো না। এজন্য আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

এসআর/জেডএস