পুলিশ সুপার (এসপি), ডিআইজিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন (সিনিয়র) কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য সরাসরি সদরদফতরে জানাতে পারবেন তাদের অধস্তন (জুনিয়র) সদস্যরা। আর তদন্তে যদি সেই অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় তবে পুরস্কৃত করা হবে তথ্যদাতা ওই পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তাকে।

সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছেন। নির্দেশনায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তথ্যদানকারী অন্য পুলিশ সদস্যকে সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শিগগিরই আদেশটি পৌঁছে দেওয়া হবে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে।

পুলিশ সদরদফতর সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ সদস্যরা নির্ভয়ে সরকারি অর্থের নিয়মিত ও অননুমোদিত ব্যয়, সরকারি সম্পদ অব্যবস্থাপনা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি সংক্রান্ত অপরাধের তথ্য দিতে পারবে। এর মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ দুর্নীতি বন্ধ হবে।

আদেশে তথ্যদাতা পুলিশ সদস্যদের জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রধান) আইন-২০১১ এবং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) বিধিমালা-২০১৭ এর অধীনে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তথ্য প্রকাশ আইন ও বিধিমালায় কোনো তথ্য প্রদানকারীর পরিচিতি প্রকাশ না করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রদানকারীর বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কোনো বিভাগীয় মামলা দায়ের না করাসহ তথ্য প্রদানকারীকে পদাবনতি, হয়রানিমূলক বদলি, বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণ ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না বরং তথ্য প্রমাণিত হলে পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তথ্য প্রদানকারী যদি মিথ্যা তথ্য দেয় তার দণ্ড হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রয়োগ করে মামলা, তদন্ত ও আইনানুগ কার্যক্রমের বিষয়টিও বলা আছে।

পুলিশের ডিআইজি সমমর্যাদার এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান আইজিপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণু) নীতি ঘোষণা করেছেন। দুর্নীতি-অনিয়ম করলে পুলিশের কেউই রেহাই পাবে না। আগে থেকেই অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুযোগ ছিল। নতুন আদেশে তথ্যদাতা বা অভিযোগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে কেউ তথ্য দিতে ভয় না পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, পুলিশে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য অনেক সময় কনস্টেবল ও এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ সংযুক্ত করা হয়। সারাদিন একসঙ্গে থাকার কারণে অধস্তন কর্মকর্তারা ঊর্ধ্বতনের অনিয়মের অনেক তথ্যই জেনে থাকতে পারেন। সেসব তথ্য সদরদফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানাতে উৎসাহিত করতেই আদেশটি জারি করা হয়েছে।

এআর/এসএসএইচ