৩১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী
প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট হবে আগামী ১১ এপ্রিল। এ নির্বাচনের বাছাইয়ে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে অবৈধ হিসেবে বাদ পড়েছে ৩৫৩ জনের মনোনয়নপত্র।
বাদ পড়া মনোনয়নের মধ্যে রয়েছে- চেয়ারম্যান পদে ৭০টি, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫৮টি এবং সাধারণ সদস্য পদে ২২৫টি। যদিও তাদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে। বাছাইয়ের পর ৩১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। এসব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন নিয়ে অবৈধ হওয়া প্রার্থীরা যদি আপিলের মাধ্যমে বৈধ না হতে পারেন তাহলে এই ৩১ প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হবেন।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২১ মার্চ) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপসচিব (চলতি দায়িত্ব) ইউপি নির্বাচনের সমন্বয়ক মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ইসি জানায়, চেয়ারম্যান পদে ১১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। স্বতন্ত্র ও রাজনৈতিক দলের মোট এক হাজার ৭৫০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার ৬৮০ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি। চেয়ারম্যান পদে মোট ৭০ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৫৩টি, আওয়ামী লীগের চারটি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ১০টি, জাতীয় পার্টির একটি, জাকের পার্টির দুটি মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্যপ্রার্থী হতে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন চার হাজার ৩০৮ জন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ৫৮টি মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে এবং চার হাজার ২৫০ জনকে বৈধ প্রার্থী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্যপ্রার্থী হতে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ১৪ হাজার ৪৩১ জন। এর মধ্যে ২২৫ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে এবং ১৪ হাজার ২০৬ জনকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে ইসি।
স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন-২০০৯-এর ২৯(৩)-এ বলা আছে, পরিষদ গঠনের জন্য কোনো সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
অর্থাৎ চলতি মাসের ২১ মার্চের আগেই প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচন আয়োজন সম্পন্ন করার কথা ছিল ইসির। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশে বিলম্ব হওয়ায় যথাসময়ে ভোট হচ্ছে না। এ জন্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনের ২৯(৫) ধারা প্রয়োগের জন্য বলা হয়েছে।
এ ধারায় বলা আছে, দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্য কোনো কারণে নির্ধারিত পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত যা আগে হবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারবে।
অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন ২১ মার্চের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ইউপির ভোট করবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৫৫টি ইউপি নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছিল। চার হাজার ৫৭১টি ইউপির মধ্যে চার হাজার ১০০টির মতো ইউপিতে ভোট করা যাবে। ২০০ ইউপিতে মামলা জটিলতার কারণে নির্বাচন আটকে আছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এরই মধ্যে ৯ বার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে প্রথম ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩ ও ২০১১ সালে ইউপি নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে নবম ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চলতি ২০২১ সালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দশম ইউপি নির্বাচন।
এসআর/এফআর/আরএইচ/এসএসএইচ