সরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস আজ। আগামীকাল থেকে শুরু হবে ঈদের ছুটি। তাই অনেকে অফিস শেষ করে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে ছুটছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। ফলে ঈদ যাত্রায় গত দুই দিনের তুলনায় আজ বিকেলে স্টেশনে ভিড় ছিল বেশি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কমলাপুর ট্রেন স্টেশনে সরেজমিনে দেখা গেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসছেন যাত্রীরা। ট্রেনের টিকিটের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে বাঁশের গেট পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন তারা।

যাত্রীরা বলছেন, এবার টিকিট ছাড়া কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে না পারায় স্টেশনে শৃঙ্খলা রয়েছে। তাই এবার বাড়তি লোকজনের ঝামেলা কম। তবে কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০-২৫ মিনিট বিলম্বে স্টেশন ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। এছাড়াও টিকিট থাকার পর স্টেশনে দায়িত্বরত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কমলাপুর স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া উপবন ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করছেন শাহ আলম। 

তিনি জানান, রাত ৮টায় স্টেশনে প্রবেশ করতে গিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনার (টিটিই) কামরুজ্জামান কাছে হয়রানির শিকার হয়েছেন।

আরও পড়ুন : অচেনা রেলওয়ে স্টেশনে মুগ্ধ যাত্রীরা

এছাড়া আরও কয়েকজন যাত্রীর অভিযোগ, টিকিট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানোর পরও হয়রানি করছেন টিটিই। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন দায়িত্বরত টিটিই কামরুজ্জামান।

যাত্রীদের অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্টেশন মাস্টার আফসার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযোগের শেষ আছে নাকি। যারা টিকিট পেয়েছেন তাদের কোনো অভিযোগ নেই। আর যারা টিকিট পাননি তাদের অভিযোগের শেষ নেই। 

স্টেশন মাস্টারের কাছে টিটিইর হয়রানির বিষয়টি জানাতে আসেন সিলেটগামী যাত্রী শাহ আলম। তিনি বলেন, টিকিট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানোর পর টিটিই কামরুজ্জামান আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। তিনি আমাকে রুমে নিয়ে ২০২০ টাকা জরিমানা চেয়েছেন। না দিলে দুই দিন জেলে রাখারও হুমকি দিয়েছেন। 

শাহ আলমের অভিযোগ জানানোর সময় ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদক স্টেশন মাস্টারের কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। 

পরে টিটিই কামরুজ্জামান কাছে হয়রানি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিনি ভুল বলছেন। আমি তাকে কোনো হয়রানি করিনি। আমি তো ইফতার করে মাত্র পানি খেতে এসেছি। 

তখন শাহ আলম বলেন, তিনি (টিটিই) মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি আমার কাছে টাকা না দিলে জেলে রাখারও হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে স্টেশনে বিনামূল্যে বাচ্চাদের ডায়াপার বিতরণ করছেন দুইজন স্বেচ্ছাসেবী। তাদের একজন জানান, স্কয়ার কোম্পানির পক্ষে থেকে দুই শিফটে প্রতিটি স্টেশনে ১৪০টি ডায়াপার বিতরণ করা হচ্ছে। 

৭টা ১৫ মিনিটে নোয়াখালীর উদ্দেশে নোয়াখালী এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলে সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায় এ ট্রেনটিকে কমলাপুর স্টেশন দেখা গেছে।

এ প্রসঙ্গে স্টেশন মাস্টার আফসার উদ্দিন বলেন, সবগুলো ট্রেন কমবেশি যথাসময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। হয়ত ১০-১৫ মিনিট লেটে ছাড়ছে। এর বেশি কিছু নয়।

এএইচআর/এসকেডি