বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন বাজেট সাপোর্ট দিতে একমত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে এখনই এই বাজেট সহায়তার ৫০০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করবে না বিশ্বব্যাংক গ্রুপের এই সংস্থাটি।

ওয়াশিংটন সময় বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাংলাদেশ অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মো. আব্দুর রউফ তালুকদার।

গভর্নর বলেন, ‌‘এটা ছিল আইএমএফের বসন্তকালীন মিটিং। এই মিটিংয়ে আমাদের অনেক সিডিউল থাকে। যেমন এবার বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সঙ্গে অনেকগুলো মিটিং করেছি। এছাড়া জি-২০ সম্মেলনে ভারত আমাদের গেস্ট কান্ট্রি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। জি-২০-তে অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরদের সঙ্গে মিটিং করেছি। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মিটিংয়ে আমাদের ৫০০ মিলিয়ন বাজেট সাপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। তবে বাজেট সাপোর্টের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সপ্তাহে আসার পর হয়তো এই অর্থটা অনুমোদন হবে এবং ঘোষণা আসবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক গ্রুপের কাছে আমাদের ২৫০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সাপোর্ট আটকে আছে। এটার কয়েকটা কন্ডিশন পূরণ করতে পারিনি। কিন্তু এই ৫০০ মিলিয়ন বাজেট সাপোর্টের সব শর্ত আমরা পূরণ করেছি। এখন জাস্ট অর্থ ছাড় হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে আমাদের অনেকগুলো প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে আমরা তাদের জানিয়েছি, তারা আমাদের যে ইন্ডিকেটরগুলো রিফর্ম করার জন্য বলেছিল, সেগুলোর বর্তমানে অবস্থা সম্পর্কে তাদের বলেছি। চলতি মাসের শেষে আইএমএফের টিম বাংলাদেশ সফরে যাবে। এগুলো কন্টিনিউ প্রসেস।’

আইএমএফের দেওয়া ঋণের বিষয়ে তাদের কোনো নির্দেশনা আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘তাদের দেওয়া অর্থের প্রথম রিভিউ আসবে আগামী সেপ্টেম্বর। তখন তারা দেখবে তাদের দেওয়া ইন্ডিকেটরগুলা আমরা অর্জন করেছি কি-না। এ মুহূর্তে তারা জানতে চেয়েছিল ইন্ডিকেটরগুলোর কি অবস্থা। আমরা তাদের বিস্তারিত জানিয়েছি। আইএমএফ এখন পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রমে খুশি।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন খাতের সাবসিটি নিয়ে তাদের কোনো আলোচনা নেই। আমরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ অন্যান্য খাতের সংস্কার নিজেদের প্রয়োজনে করছি। এই বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ডলারের সিঙ্গেল রেট কোনো দিনই হবে না। সবকিছুর আলাদা রেট থাকবে। আমদানি, রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয় এগুলোর আলাদা আলাদা রেট থাকবে। সবগুলোকে ২ শতাংশ ডিভিশনের মধ্যে আনতে হবে বলে জানিয়েছিল আইএমএফ। আমরা কিন্তু ইতোমধ্যে ২ শতাংশের মধ্যে নিয়ে এসেছি। দেখেন আমাদের এখন রেমিট্যান্স ১০৭ টাকা, এক্সপোর্ট হচ্ছে ১০৫ টাকা। এখানে ২ শতাংশ ডিফারেন্ট। এখন আমরা আস্তে আস্তে মার্কেটের দিকে যাব।’

রউফ তালুকদার বলেন, ‘এই রমজানে বাংলাদেশে সব প্রোডাক্টই পাওয়া গেছে। কোন পণ্যের ঘাটতি হয়নি। মূলত ইমপোর্টে যে ঝামেলা ছিল, সেগুলো আমরা দূর করেছি। সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমাদের আর কোনো ক্রাইসিস থাকবে না।’

আইএমএফের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন কেমন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইএমএফের দৃষ্টিতে তিন মাস ইমপোর্টের রিজার্ভ থাকতে হবে। বর্তমানে আমাদের প্রতিমাসের আমদানি ব্যয় ৬ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছে। সেই হিসেবে আমাদের এখন যেই রিজার্ভ আছে তাতে ৫ মাসের মতো আমদানি করতে পারব। একটা দেশের মিনিমাম যেই রিজার্ভ থাকার কথা তার থেকে বেশি আছে। রিজার্ভ নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’

এসআর/ওএফ