পবিত্র মাহে রমজানের সপ্তম দিন আজ। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ অফিস-আদালত বিকেল ৩টায় ছুটি হওয়ায় সব গাড়ি একসঙ্গে রাস্তায় বের হয়েছে। আবার শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় অনেকে ঢাকা ছাড়তে রওনা হয়েছেন। এতে রাজধানীর সদরঘাট, সায়েদাবাদ, গাবতলীমুখী গাড়ির চাপ অনেকটা বেড়েছে। ফলে যাত্রীদের যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, বিজয় সরণি ও গ্রিন রোড এলাকা ঘুরে যানজটের চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীরা বলছেন, আজ সড়কে গাড়ির সংখ্যা গত তিন দিনের তুলনায় অনেক বেশি।

কুড়িল, বনানী, বাড্ডা, গুলশান ও বনানী এলাকায় সরেজমিনে দেখে গেছে, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হলেও এসব এলাকায় রমজানের প্রথম কর্মদিবসের মতো অসহনীয় যানজট নেই। তবে বেশ কয়েকটি এলাকায় যান চলাচলে ধীরগতি রয়েছে।

বনানী এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, বনানীর ১১ নম্বর রোডসহ আরও কয়েকটি রোডে যানজট রয়েছে। বিকেল ৪টা থেকে এ এলাকায় যানজট শুরু হয়েছে। তবে বনানীর ভেতরের রাস্তায় যানজট থাকলেও প্রধান সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।

বনানী এলাকার যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাস্তায় গাড়ির চাপ রয়েছে, তবে তা অসহনীয় পর্যায়ে নয়। রোজার মাসে মানুষের অফিস ছুটি হয়েছে একসঙ্গে, সবাই বাসায় ফিরছেন ইফতার করার জন্য, সেজন্য রাস্তায় কিছুটা গাড়ির চাপ রয়েছে। তবে তা খুব অসহনীয় পর্যায়ে নয়। আশা করা যায় বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে রাস্তা আরও সচল হবে।

এদিকে, বনানী থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে। মহাখালী এলাকার যান চলাচল নিয়ে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, রাস্তায় গাড়ির চাপ আছে, পরিস্থিতি ঠিক রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হলেও রাস্তায় একেবারে জট লেগে আছে এরকম পরিস্থিতি নয়। চাপ থাকলেও যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে এটা বলতে পারি, আজ রোজার প্রথম কর্মদিবসের মতো যানজট নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, অফিস ফেরত ও ঘরমুখী যাত্রীরা দীর্ঘসময় ধরে বসে থাকছেন যানজটে। গাড়ির গতি কম থাকায় বাসায় পৌঁছে যথাসময়ে ইফতার করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। রাজধানী বাংলামটর এলাকায় বাসযাত্রী সোহেল রানা বলেন, মিরপুরে যাওয়ার জন্য সাড়ে ৩টায় মতিঝিল থেকে বাসে উঠেছি। এখন সাড়ে ৪টা বাজে। এখনো বাংলামোটরে। কখন পৌঁছাবো জানি না। হয়ত অন্যান্য দিনের মতো আজও রাস্তায় ইফতার করতে হবে।

উত্তরাগামী বাসে উঠেছেন সাদিকুর ইসলাম। তিনি বলেন, দৈনিক বাংলা থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লেগেছে দেড়  ঘণ্টা। প্রতিটা মোড়ে মোড়ে ২০ মিনিট করে যানজটে বসে থাকতে হয়েছে।

আগারগাঁও পরিকল্পনা কমিশনের সামনে থেকে যাত্রাবাড়ী যাবেন চাকরিজীবী সানজিদা পারভীন। তিনি বলেন, অফিস শেষ করে গত দুই দিন বাসায় যেতে পারলেও আজ যাওয়া সম্ভব হবে না। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় রাস্তায় যানজট অনেক বেশি।

সংসদ ভবন মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কবির হোসেন। তিনি বলেন, ৪০ মিনিট ধরে বাসে জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কোনো বাস তো পাচ্ছি না, উবার, পাঠাও কল করে মোটরসাইকেলও পাওয়া যাচ্ছে না। কন্ট্রাক্টে যাব সেই মোটরসাইকেল পেলেও অতিরিক্ত ভাড়া চাইছে। এ অবস্থায় রাস্তায় ইফতার করতে হবে বলে মনে হচ্ছে।

এনএম/এসএসএইচ/