চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় স্তন কেটে ফেলার অভিযোগ
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর স্তন কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও ডা. জেসমিন বেগম ভুল চিকিৎসার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কুয়াইশ নতুন রাস্তা মাথা এলাকার বাসিন্দা পেশায় গৃহিণী। সম্প্রতি তার একটি স্তনের অংশবিশেষ শক্ত হয়ে যায়। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি মা ও শিশু হাসপাতালের ব্রেস্ট ক্যান্সার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জেসমিন বেগমের কাছে যান। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অপারেশনের পরামর্শ দেন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি অপারেশন করে তার একটি স্তন কেটে ফেলা হয়।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, চিকিৎসক জেসমিন বেগম তাকে কি রোগ হয়েছে সেটি বলেননি। শুধুমাত্র খারাপ কিছু হয়েছে উল্লেখ করে তার স্তন অপারেশন করতে বলেন। তিনি শুধুমাত্র শক্ত অংশ কেটে ফেলা হবে মনে করে অপারেশন করতে রাজি হন। কিন্তু অপারেশনের পর দেখেন তার একটি স্তন কেটে ফেলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ডাক্তারকে এত করে বলেছি, যে আমার অসুখ শুধুমাত্র ওষুধে সারানো সম্ভব কি না। কিন্তু ডাক্তার বলেছেন, অপারেশন করাতেই হবে। কিন্তু অপারেশনের পর আমার অসুখ ভালো না হওয়ায় আমি আরেকজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাই। তিনি আমাকে বলেছেন এটি কেমোথেরাপির মাধ্যমে সারানো সম্ভব ছিল। শুধু শুধু অপারেশন করানো হয়েছে। এরপর তার চিকিৎসায় এখন আমার একটু ভালো লাগছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ভুল চিকিৎসার বিষয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অভিযোগ করতে বলা হয়। এরপর আমি গতকাল (সোমবার) সেখানে অভিযোগ করেছি। আজ (বুধবার) মা ও শিশু হাসপাতালে আরেকটি অভিযোগ করেছি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মা ও শিশু হাসপাতালের ব্রেস্ট ক্যান্সার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জেসমিন বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিদিন অনেক রোগী আসেন। সঠিক মনে থাকে না। তবে ওই রোগীর বিষয়টি আমার মনে আছে। কারণ তিনি একটু টাকা কম দিতে চেয়েছিলেন। আমিও সাধ্যমতো কম নিয়েছি। ওই রোগীকে যথাযথ পরীক্ষা শেষে অপারেশন করানো হয়েছে। তার অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। এগুলোর সব ডকুমেন্টস জমা আছে। এখন তিনি কী কারণে অভিযোগ করেছেন জানি না।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় এক রোগীর কাছ থেকে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য বিভাগে জমা দেবে। প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআর/এসকেডি