ট্রেনের টিকিট অনলাইনে কিনবেন যেভাবে
বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং সিস্টেম ধাপে ধাপে পুরোপুরি অনলাইনের দিকে ঝুঁকছে। রেলওয়ে টিকিট বিক্রির সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’ কর্তৃপক্ষ বর্তমানে ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে এবং বাকি টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করছে। কিন্তু আসন্ন ঈদুল ফিতরে আন্তঃনগর ট্রেনের ১৪ দিনের অগ্রিম টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঈদে কীভাবে যাত্রীরা অনলাইনে টিকিট কিনবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, চলতি মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে কালোবাজারি রোধে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নীতিতে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বর্তমানে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ চারটি আসন একসঙ্গে কিনতে পারছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। কিন্তু ওই চার আসন সমৃদ্ধ একটি টিকিটে একজনেরই নাম ও এনআইডি ছাপানো হচ্ছে। অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এবার একটি টিকিটেই চারটি আসনের বিপরীতে চার জনেরই নাম ও এনআইডি যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া আগামী ১ এপ্রিল থেকে ১০ দিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করবে রেলওয়ে।
বিজ্ঞাপন
কীভাবে যাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন, সে বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে শনিবার (২৫ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্মানিত যাত্রী সাধারণের সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতরে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট (১৭-৩০ মার্চ) শুধু অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে। এছাড়া বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটিং ব্যবস্থা ও অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকিট রিফান্ডের (ফেরত) ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন >> ট্রেনের টিকিটে ছাপানো থাকবে ৪ যাত্রীর নাম!
বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের প্রতি রেলওয়ের জানানো নির্দেশনা ও শর্তাবলি হচ্ছে—
ক) আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীরা দ্রুত জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন করবেন।
খ) নিবন্ধনের জন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে BR <space> NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ (জন্ম তারিখের ফরম্যাট- জন্ম সাল/মাস/দিন) লিখে ২৬৯৬৯ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কি না, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
গ) https://eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইট অথবা ‘Rail Sheba’ app-এ সঠিক NID নম্বর ও জন্ম তারিখ verify পূর্বক অন্যান্য তথ্য দেওয়া সাপেক্ষে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
ঘ) বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর প্রদান ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
ঙ) ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান ও জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।
চ) সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন না। স্ট্যান্ডিং যাত্রীদের ক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
ছ) একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি আসনের টিকিট কিনতে পারবেন। তবে অনলাইনে টিকিট কেনার সময় সহযাত্রীদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন নম্বর লিপিবদ্ধ করতে হবে।
জ) ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি/সফটকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবিসংবলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর নাম ও এনআইডি নম্বর যাত্রী কর্তৃক প্রদর্শিত পরিচয়পত্রের সঙ্গে না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রথমবারের মতো এবার ঈদে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ঈদের সময় কমলাপুরের যে পরিবেশ তৈরি হয়— এটা রেলের জন্য খুবই বিব্রতকর হয়। মানুষ দুই দিন কমলাপুরে থেকেও টিকিট পায় না। সব মানুষ টিকিট পাবে না। ঈদের সময় আমাদের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায়। তাই অনলাইনে শতভাগ টিকেট দেওয়া হবে। কমলাপুরে গিয়ে টিকিটের জন্য যাত্রীদের যেন ঘুরতে না হয় এবং তারা যেন বাসায় বসে টিকিট কাটতে পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার যদি কোনো ভুল-ত্রুটি হয় তবে সেটি আগামী ঈদে সংশোধন করা হবে।
/এমএইচএন/এসএসএইচ/