বছর ঘুরে আবার এলো মুসলমানদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ মাস পবিত্র মাহে রমজান। রোজার প্রথম দিনে রাজধানীর ধানমন্ডির অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে পাড়া-মহল্লার টঙের দোকান পর্যন্ত সর্বত্র রয়েছে রকমারি ইফতারের আয়োজন। বাহারি ইফতারে সেজেছে প্রতিটি রেস্তোরাঁ। তবে চাহিদা মতো ক্রেতা পাচ্ছে না বিক্রেতারা। অন্যদিকে, এবার তুলনামূলকভাবে ইফতারের দাম অনেকটাই বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা।

রাজধানীর ধানমন্ডির সাত রাস্তায় প্রায় শতাধিক নামিদামি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি রেস্তোরাঁয় জুমার নামাজের পর থেকে নানা রকমের ইফতার সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি রেস্তোরাঁতেই অর্ধশতাধিক পদের ইফতার রয়েছে। তবে বাহারি রকমের ইফতারের আয়োজনের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা অনেকটাই কম। আবার যারা ইফতার কিনতে এসেছেন তারাও কিনছেন সীমিত। আগের মতো ব্যাগভর্তি করে ইফতার কিনতে দেখা যায়নি। পছন্দের তালিকা থেকে অল্প অল্প করেই ইফতার কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের।

রেস্তোরাঁগুলোর বাহারি ইফতার আয়োজনের মধ্যে রয়েছে বিফ চাপ প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা, খাসির গ্রিল চাপ কেজি ১২০০ টাকা, খাসির লেগ কাবাব প্রতি পিস ৫৫০ টাকা, খাসির লেগ রোস্ট প্রতি পিস ৫৫০ টাকা, খাসির হালিম প্রতি পেয়ালা ১০০ টাকা, চিকেন ফুল রোস্ট (বড়) প্রতি পিস ৫০০ টাকা, চিকেন রোস্ট (ছোট) (পাকিস্তানি) প্রতি পিস ৪০০ টাকা, চিকেন রোস্ট (প্রতি পিস ১২০ টাকা), চিকেন ফ্রাই (ব্রয়লার) প্রতি পিস ৭৫ টাকা, চিকেন ফ্রাই প্রতি পিস ১২০ টাকা, চিকেন সাসলিক প্রতি পিস ৬০ টাকা, চিকেন উইংস প্রতি পিস ৩০ টাকা, চিকেন চিজ বল প্রতি পিস ২৫ টাকা, চিকেন অনথন প্রতি পিস ২৫ টাকা, ফিস ফিঙ্গার প্রতি পিস ৬০ টাকা, জালি কাবাব প্রতি পিস ২৫ টাকা, শামি কাবাব প্রতি পিস ২৫ টাকা, চিকেন ড্রাম স্টিক প্রতি পিস ৬৫ টাকা, চিকেন চিজ বল প্রতি পিস ৩০ টাকা, চিকেন চিজ রোল প্রতি পিস ৩৫ টাকা, চিকেন রোল প্রতি পিস ৩০ টাকা, চিকেন সমুচা প্রতি পিস ২০ টাকা, চিকেন পরোটা প্রতি পিস ৫০ টাকা, কিমা সমুচা প্রতি পিস ২০ টাকা, পনির সমুচা প্রতি পিস ২৫ টাকা, পিঁয়াজু প্রতি পিস ৮ টাকা, আলুর চপ প্রতি পিস ৮ টাকা, বেগুনি প্রতি পিস ৮ টাকা, ভেজিটেবল রোল প্রতি পিস ২৫ টাকা, স্প্রিং রোল প্রতি পিস ২৫ টাকা, চাইনিজ রোল প্রতি পিস ২৫ টাকা, চিকেন কাটলেট প্রতি পিস ৬০ টাকা, কিমা পরোটা প্রতি পিস ৫৫ টাকা, টানা পরোটা প্রতি পিস ৩৫ টাকা, বাটার পরোটা প্রতি পিস ৫৫ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, রেশমি জিলাপি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, লাবাং লিটার ২০০ টাকা।

জানতে চাইলে স্টার বেকারির ইফতার বিক্রেতা ইমামুল হাসান টাকা পোস্টকে বলেন, আজ রমজানের প্রথম দিন। ক্রেতা আসতে শুরু করেছে। কিন্তু আমরা যে পরিমাণ ক্রেতা আশা করেছিলাম, সেটা এখনো দেখা যায়নি। আশা করছি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়বে।

প্রথম দিনের ইফতারের জন্য কী কী কেনা হয়েছে— জানতে চাইলে ইকবাল হোসেন নামের এক ক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিলাপি, সমুচা, পরোটা, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই কিনেছি। অন্য বছরের তুলনায় এবার একটু দাম বেশি মনে হচ্ছে। তাদের (বিক্রেতা) দোষ দিয়ে কি হবে। ইফতারের পণ্যের যেভাবে দাম বাড়ছে, তারাইবা কম দেবে কি করে। তবে দাম আরেকটু কমানো যেত।

এ ওয়ান ফুড ইফতার বাজারে কথা হয় ক্রেতা আহমদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, একেক দোকানে একেক দাম। আবার একেক দোকানে একেক রকম ইফতার সামগ্রী। কেউ বেশি নিচ্ছে, আবার কেউ কম নিচ্ছে। তুলনামূলকভাবে ইফতারের দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমরা নিরুপায়, কম হোক বেশি হোক নিতে হবে।

এমএসআই/এসএসএইচ/