এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড পরিচালনায় ৭ নারী
দেশের পুলিশ বাহিনীতে নতুন যুগের সূচনা হলো। এই প্রথম পুলিশের কোনো ডগ স্কোয়াড পেল সাত নারী হ্যান্ডলার। এটি শুধু বাংলাদেশই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে এর আগে নারী হ্যান্ডলার ছিল না।
বাংলাদেশ অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৭ নারী সদস্যকে ডগ স্কোয়াডের হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই ৭ নারী সদস্য এখন থেকে বিমানবন্দর (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াডে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন।
বিজ্ঞাপন
প্রশিক্ষণ নেওয়া সাত নারী কনস্টেবল হলেন- নাসিমা, তানজীমা, সুনেত্রা, মরিয়ম আক্তার, নিলুফা, অনামিকা ও ইশরাত।
এপিবিএন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সহযোগিতায় এই সাত নারী কনস্টেবলকে ডগ হ্যান্ডলারের ৬ দিনের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব পালনের সময় তারা বিমানবন্দরে চোরাই মামলা বা কিংবা অবৈধ কোনো মালামাল নিয়ে এলে ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে এসব খোঁজে বের করবেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ব্যারাকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সাত নারী কনস্টেবলের হাতে ডগ হ্যান্ডলার হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করা সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিমানবন্দর (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি তোফায়েল আহম্মদ বলেন, বর্তমানে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ছাড়াও ডিএমপি ও র্যাবের ডগ স্কোয়াড রয়েছে। তবে বিমানবন্দর (১৩) আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করে নিজেদের ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার গড়ে তুলেছে। সাত নারী পুলিশ সদস্য বেসিক কে-নাইন হ্যান্ডলার কোর্সে অংশ নিয়ে নতুন যুগের সূচনা করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি নিরাপত্তা পরিস্থিতি যেন এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন প্রাথমিক ধাক্কাটা সকলের সহযোগিতায় সামলাতে পারে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকবে। তারপরেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করব এই ইউনিট যেন ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, কে-নাইন আমরা আন্তর্জাতিক মানের কে-নাইন করতে চাচ্ছি। নারী হ্যান্ডলারদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু করেছি। আশা করি নারী হ্যান্ডলারদের দিয়ে আমরা সুন্দরভাবে কে-নাইন পরিচালনা করতে পারব।
তোফায়েল আহম্মদ বলেন, নারী হ্যান্ডলার বাংলাদেশ নেই। যতটুকু জানি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আর কোনো বাহিনীর ডগ স্কোয়াডে নারী হ্যান্ডলার নেই। আমরাই প্রথম মহিলা হ্যান্ডলারদের দিয়ে কে-নাইন পরিচালনা শুরু করেছি। তাদেরকে আগামীতে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেব। চেষ্টা করব যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মাধ্যমে তাদের বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণের দেওয়ার। এই সাত মেয়ে স্বেচ্ছায় এসেছেন। তারা ডগ স্কোয়াডের পুরুষ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হ্যান্ডলার প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে এই সাত নারীর হাতে ডগ হ্যান্ডলার প্রশিক্ষণ সমাপ্তির সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম ও যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্টার টেররিজম অ্যাডভাইজার (উপদেষ্টা) ডোনাল ডেনিসনসহ প্রমুখ।
এমএসি/ওএফ