ভোটের সময় ইন্টারনেটের গতি কমালে নির্বাচন ব্যাপকভাবে বিতর্কিত হবে
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সরকারকে অনুধাবন করতে হবে যে, ভোটের সময় ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিলে নির্বাচন ব্যাপকভাবে বিতর্কিত হবে।
সোমবার (১৩ মার্চ) নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে ইসির সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি-আরএফইডির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আরএফইডির নেতারা ভোটের সময় সাংবাদিকদের অবাধ সুযোগ তৈরিতে বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
সিইসি বলেন, নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সাদরে গ্রহণ করা হয়। আরএফইডির প্রস্তাব কমিশনে আলোচনা করে বিবেচনা করা হবে। সংসদ নির্বাচনের দিন কড়াকড়ির বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা তথ্য যদি সংগ্রহ করেন। অবাধ তথ্য সংগ্রহের সুযোগ থাকে, দুষ্টু নয়, বস্তুনিষ্ঠ; তাহলে কিন্তু স্বচ্ছতাটা অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত হবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, যতই ওনাদের (সাংবাদিকদের) বাধা দেওয়া হবে ততই ওনাদের মনে হবে- ডাল ম্যা কুচ কালা হ্যায়। এই ধরনের একটা ভাব সৃষ্টি হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি স্বচ্ছতা লাগবে। আমরা গণমাধ্যমের বিপক্ষে নই। তবে গণতন্ত্রের স্বার্থে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয়, আমরা বিষয়টি দেখবো।
ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, স্লো (ধীর) করা যদি অপকৌশল হিসেবে করা হয়, তাহলে নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে বিতর্কিত করবে। এটা সরকারের অনুধাবন করা উচিত। এটা সরকার যদি স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করে, নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ্বাস করে, তাহলে নির্বাচনের দিন এই জিনিসগুলো না করলেই বোধ হয় ভালো হবে। কারণ, এতে সন্দেহের উদ্রেক হবে। অনেকেই ভাববেন অপকর্মের জন্যই এটা করা হয়েছে।
অন্য এক প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারের কর্তৃত্ব খর্ব করা ঠিক হবে না। তিনি ভোটের দিন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে থাকেন। তবে তিনি কোনো অপকর্ম করলে আইনে বিধান আছে। এতে কোনো ঘাটতি থাকবে না।
সাংবাদিকদের পুলিশি বাধার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছে না, এমন হলে সিরিয়াসলি নিতে হবে আমাদের। যদি নির্বাচন কমিশন থেকে আপনাদের অথরাইজ করা হয় সেই অথরিটির ওপর পুলিশ আপনাদের ঢুকতে দিচ্ছে না, এমন হয়; তাহলে আপনারা ছবি তুলে দেখাবেন। আমাদের বিষয়টি অবহিত করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমের মাধ্যমে যদি স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে আমাদের বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগটা বেড়ে যাবে। গণমাধ্যমের বিপক্ষে কখনোই আমাদের অবস্থান নয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের স্বার্থে যদি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় সে বিষয়টা আমরা দেখবো।
সভায় অন্যদের মধ্যে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ আরএফইডির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/জেডএস