বামে নিখোঁজ মেহেদি হাসান, ডানে তার দুলাভাই আবু তাহের

সপ্তাহখানেক আগেই নোয়াখালীর বজরা গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিল মেহেদি হাসান স্বপন(৩৮)। অফিসে কাজের চাপ আর মালিকের ফোন পেয়ে দ্রুত ফিরেন কর্মস্থলে। এই দ্রুত ফিরে আসাই যে তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে, কে জানতো!

গতকাল মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে আকস্মিক বিস্ফোরণের পর থেকে নিখোঁজ মেহেদি। অনেক হতাহতের খবরের মধ্যেও খোঁজ মেলেনি তার। বুধবার (৮ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারের নর্থসাউথ রোডে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে হতাহত অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও খবর মেলেনি মেহেদির। তিনি জীবিত নাকি মৃত তা নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

এদিন সন্ধ্যায় বিস্ফোরিত ভবনের সামনে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় নিখোঁজ মেহেদির স্বজনদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিস্ফোরিত ভবনটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ সেনেটারি নামক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিলেন মেহেদি। ১২ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সেখানে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী মুনমুন, এক ছেলে (১০) ও এক মেয়ে(৬) গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন।

বিস্ফোরিত ভবনের সামনে নিখোঁজ মেহেদির দুলাভাই আবু তাহেরের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাসা খুলনায়। গতকাল রাতে আমার বাসায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় ওর মোবাইল বন্ধ পাই। পরে খবর পাই ওর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকেই নিখোঁজ মেহেদি। বন্ধ তার মোবাইল নাম্বারও।

তিনি বলেন, এই অপেক্ষা বড় যন্ত্রণার। সর্বশেষ আজ চোখের সামনে দুটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাই আশা করতে পারছি না যে মেহেদি জীবিত। কিন্তু এরকম একটি পরিবার রেখে মেহেদি মারা যাবে সেটি ভাবনাতেই আনতে পারছি না।

আবু তাহের আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। খুব করে চাচ্ছি মেহেদি জীবিত উদ্ধার হোক।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) আক্তারুজ্জামান বলেন, সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে ভবনটির একদম বেজমেন্ট থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো একজন নিখোঁজ বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ভবন ও দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চালানো হবে।

জেইউ/এমজে