সায়েন্সল্যাবের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা
রাজধানীর সায়েন্সল্যাবের বিস্ফোরণের ঘটনায় কেঁপে উঠেছিলো পুরো এলাকা। কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ভবন নয়, কেঁপে উঠেছিলো আশপাশের বহু ভবন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিস্ফোরণটি অনেক শক্তিশালী ছিল।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এ ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ জনের মতো আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সায়েন্সল্যাবের একটি ভবনের তিন তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভবনটির তৃতীয় তলায় ফিনিক্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানির অফিসটিতে মূলত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে পাশের একটি ১৪ তলা আবাসিক ভবনও কেঁপে ওঠে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ভবনটির বাসিন্দারা।
ভবনটির সিকিউরিটি গার্ড আব্দুল কাদির বলেন, বিস্ফোরণের সময় ভবনের গেইটে একটি চেয়ারে বসেছিলাম। বিস্ফোরণে ভবনসহ আমার চেয়ার কেঁপে ওঠে। বিকট শব্দে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে নিচে নামতে থাকেন। পরে বের হয়ে দেখি তিন তলা ভবনটির সামনে মানুষজন পড়ে আছে আর ভেতরে সবকিছু চুরমার হয়ে গেছে।
বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন ভবনটির পাশের মার্কেট প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের দোকানিরাও। তাদের একজন মো. সানাউল্লাহ ভুঁইয়া। প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে তার কসমেটিকসের দোকান আছে।
তিনি বলেন, আমি তখন মার্কেটে আমাদের দোকানে বসে নাশতা করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে চারদিক কেঁপে ওঠে। পরে দৌড়ে মার্কেটের ভেতর থেকে বের হই। দেখি শিরিন ম্যানশনের তিনতলা উড়ে গেছে। নিচে ৪-৫ জন মানুষ পড়ে আছে। তাদের মধ্যে ৩ জনকে দেখে মনে হয়েছে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। পরে কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিস্ফোরণ এত জোরে হয়েছিল যে কী বলব, মাথার মধ্যে এখনো সেই শব্দ ঘুরছে।
ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট। পরে একে একে আসে সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সিআইডির ক্রাইম সিন, পিবিআইসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সদস্যরা। তারা প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ জানার চেষ্টা করছেন।
তদন্তকারী দলগুলো বলছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা অনেক বেশি ছিল। তবে এটি দুর্ঘটনা, নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, বিল্ডিংয়ের অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটির তিনতলায় ছোট ছোট কয়েকটি অফিস ছিল এবং একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অফিস ছিল। যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমি মনে করি এই মুহূর্তে ভবনটিতে কারো প্রবেশ করা উচিত হবে না। ঝুঁকি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের কারণ বলা যাচ্ছে না। চারটি কারণে এখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। শর্ট সার্কিট, জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণ, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও এসি থেকেও বিস্ফোরণ হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণটি বলা যাচ্ছে না। সঠিক কারণ তদন্ত শেষ হলে জানা যাবে।
হতাহতের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুনেছি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পপুলার হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে আহত ১২ থেকে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা গুরুতর।
এমএসি/এমজে