গবেষণাই আমাদের সাফল্য এনে দিতে পারে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গবেষণা আমাদের সাফল্য এনে দিতে পারে, সেটা এখন প্রমাণিত। একের পর এক গবেষণার ফলেই আমিষ ও খাদ্য উৎপাদনে আমরা সফল হয়েছি।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও গবেষণা জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। শুধু নিজের দেশে নয়, বিদেশ থেকে জ্ঞান আহরণ করে দেশের উন্নয়নেও যেন ভূমিকা রাখতে পারে সে ব্যবস্থাও করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, এখানে থেমে থাকলে হবে না। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিয়ে যাবে নতুন প্রজন্ম। আমরা কোনোভাবেই পিছিয়ে পড়ব না, কারো কাছে হাত পেতে চলব না। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
দেশে স্বাস্থ্য বিজ্ঞান নিয়ে খুবই কম গবেষণা হচ্ছে জানিয়ে এ সেক্টরে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের কৃষি গবেষণা চলছে, বিজ্ঞানেও চলছে। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য খাতে গবেষণাটা খুবই সীমিত, খুবই কম।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যারা ডাক্তার হন, তারা ডাক্তার হয়ে পুলিশের চাকরিতে চলে যান বা রাজনীতিবিদ হয়ে যান। তারা ডাক্তারিও করেন না গবেষণাও করেন না। আর এক শ্রেণি আছে তারা শুধু টাকা কামাই করতেই ব্যস্ত। সরকারি চাকরিও করবেন আবার প্রাইভেটে প্র্যাকটিসও করবেন। সরকারি চাকরি আর প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করে- সেখানে আর গবেষণা হয় না।
স্বাস্থ্য সেক্টরে গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এই সেক্টরে গবেষণাটা খুব দরকার। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা খুবই সীমিত কয়েকজন করেন। এটা যেন আরো হয় সেজন্য সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।
দেশের জনসংখ্যা বিবেচনায় শ্রম, শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পের ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারপ্রধান বলেন, প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে, এখন নতুন একটি যুগ এসে গেছে; চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। যেখানে হয়ত আমাদের লোকবল কম লাগবে। কিন্তু টেকনোলজি আমাদের ব্যবহার করতে হবে; তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। তার জন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার।
দেশের অধিক জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আবার আমরা সম্পূর্ণ সেদিকে (প্রযুক্তি নির্ভর) যেতে চাই না। আমরা শ্রমঘন শিল্প করতে চাই। আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী, তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। কাজেই দুটো মিলে আমরা কীভাবে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই চিন্তাটা সবার মাথার মধ্যে থাকতে হবে, এটাই আমি চাই।
গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু ধান উৎপাদন নয়, তরিতরকারি, ফলমূল, মাছ-মাংস-ডিম-দুধ সবকিছু উৎপাদনে আমরা যে সাফল্য পেয়েছি, সবই কিন্তু গবেষণার ফসল। এটা একমাত্র গবেষণার জন্য সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের আরো অনেক বিজ্ঞানী দরকার, আমাদের খুব দক্ষ বিজ্ঞানী দরকার। এদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।
যারা ফেলোশিপ পেয়েছেন তাদের আন্তরিকতার সঙ্গে গবেষণার করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি যারা এই ফেলোশিপ বা গবেষণার জন্য সহায়তা পেয়েছেন, আপনারা একটু আন্তরিকতার সঙ্গে গবেষণা করবেন। আমি তো জানতেও চাই কী কী উদ্ভাবন আপনারা করলেন, কতটুকু কাজে লাগবে। আসলে গবেষণার কোনো শেষ নেই।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ১০ জনকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, ২১ জনকে এনএসটি ফেলোশিপ এবং ১৬ জনকে বিশেষ গবেষণা অনুদানের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এনএম/জেডএস