সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রাথমিক খসড়ায় ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩টি আসন অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। নতুন সিটি করপোরেশন ও উপজেলা সৃষ্টি হওয়ায় ৬টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে ময়মনসিংহ-৪, মাদারীপুর-৩, সুনামগঞ্জ-১, সিলেট-১, সিলেট-৩, কক্সবাজার-৩ আসন।

ময়মনসিংহ-৪

বর্তমানে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নিয়ে আসনটি রয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন হওয়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে- সিটি করপোরেশনভুক্ত এবং সদর উপজেলা নিয়েই আসনটির বিস্তৃতি হবে।

মাদারীপুর-৩

কালকিনি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে ‘ডাসার’ নামে নতুন একটি উপজেলা সৃষ্টি হওয়ায় পরিবর্তন আসছে এ আসনে। বর্তমানে কালকিনি উপজেলা এবং মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন (খোয়াজপুর, ঝাউদি, ঘটমাঝি, মস্তফাপুর ও কেন্দুয়া) নিয়ে এ আসনটি রয়েছে।

প্রস্তাবিত নির্বাচনী এলাকার বিস্তৃতি হবে- কালকিনি, ডাসার ও মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন।

সুনামগঞ্জ-১

ধর্মপাশা উপজেলার চারটি ইউপি নিয়ে ‘মধ্যনগর’ নামে নতুন উপজেলা হওয়ায় এ আসনে পরিবর্তন আসছে। ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা নিয়ে এ আসনটি বিদ্যমান রয়েছে। নতুন করে মধ্যনগর নামটি যুক্ত হবে এ আসনে।

সুনামগঞ্জ-৩

এ আসনের বর্তমান সীমানা হচ্ছে জগন্নাথপুর উপজেলা ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ নাম পরিবর্তন হয়ে এখন শান্তিগঞ্জ। সেক্ষেত্রে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ নিয়ে একই সীমানা থাকলেও পরিবর্তন দেখানো হয়েছে।

সিলেট-১

সদর উপজেলার একটি ইউপি সম্পূর্ণ ও তিনটি ইউপির আংশিক সিলেট সিটির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকা ও সদর উপজেলা নিয়ে আসনটি ছিল। এখন সিলেট সদরের সঙ্গে ১-২৭ ও ৩১-৩৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়েই হবে এ আসন।

সিলেট-৩

দক্ষিণ সুরমার দুটি ইউপি সম্পূর্ণ ও একটি ইউপির আংশিক সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে এখন আসনটি রয়েছে। প্রস্তাবিত সীমানায় সিটি ওয়ার্ড ২৮-৩০ ও ৪০-৪২ এবং দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা থাকবে।

কক্সবাজার-৩

সদর উপজেলার পাঁচটি ইউপি নিয়ে ‘ঈদগাঁও’ নামে নতুন উপজেলা হওয়ায় এখানে পরিবর্তন আসছে। বর্তমানে কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা নিয়ে আসনটি রয়েছে। প্রস্তাবিত সীমানায় কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও ও ও রামু উপজেলা হবে।

প্রত্যেক আদমশুমারির পর আদমশুমারি পরবর্তী সংসদের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এবার চূড়ান্ত জনশুমারি প্রতিবেদন পেতেই বিলম্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। সেক্ষেত্রে আগের সংসদ নির্বাচনের সীমানা বহাল রেখেই খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১ অনুযায়ী- ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি সর্বশেষ আদমশুমারির প্রতিবেদনে উল্লিখিত জনসংখ্যার যতদূর সম্ভব বাস্তব বণ্টনের ভিত্তিতে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

দৈব দুর্বিপাক বা অন্য কোনো যুক্তিসংগত কারণে নতুন করে সীমানা নির্ধারণ সম্ভব না হলে সর্বশেষ নির্ধারিত সীমানার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার আয়তন, অবস্থান ইত্যাদি হুবহু ঠিক রেখে কেবল প্রশাসনিক পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচনী এলাকাগুলোর তালিকা গেজেটে প্রকাশ করবে।

জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘৩০০ সংসদীয় আসনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আগের সংসদ নির্বাচনের সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে। শুধু প্রশাসনিক এলাকার নাম পরিবর্তন ও সিটি এলাকাভুক্ত অংশ যুক্ত করে ছয়-সাতটি আসনে পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাস্তবে আগের সীমানাই রয়েছে। ৩০০ আসনের সীমানা নিয়ে এখন দাবি, আপত্তি আবেদন এলে কমিশন পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

এসআর/এমজে