বৈদেশিক চাকরিতে নিয়োগ বিষয়ে ‘সরকারি কর্মচারী লিয়েন বিধিমালা’ জারি করেছে সরকার। সম্প্রতি চব্বিশ পৃষ্ঠার বিধিমালাটি জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা। 

সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ এর ধারা ৫৯(১) বলে জারি হওয়া বিধিমালায় লিয়েনে ছুটি নিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ ভোগ করার ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্তারোপসহ প্রয়োজনীয় অনেক বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। লিয়েনে অন্যত্র চাকরি নিলেও সরকারি চাকরি চলে যাবে না। তবে যে পদে চাকরি নেবেন সে পদটি তার বর্তমান পদমর্যাদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। 

এছাড়া বিধিমালার ১১ নং বিধিতে লিয়েন আবেদন মঞ্জুরের বিষয়ে ২৪ দফা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য শর্তের মধ্যে রয়েছে- সমগ্র চাকরি জীবনে একজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিচ্ছিন্ন কিংবা ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত লিয়েন ছুটি ভোগ করতে পারবেন। তবে ছুটি মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত কেউ অফিসে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। 

কোনো অবস্থাতে ভূতাপেক্ষ লিয়েন মঞ্জুর হবে না। লিয়েন ছুটি পেতে হলে চাকরি স্থায়ী হওয়াসহ চাকরিকাল কমপক্ষে ৫ বছর পূর্ণ হতে হবে। কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন বা চলমান থাকলে অথবা ফৌজদারি মামলা দায়ের হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি লিয়েনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। লিয়েনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৪ সপ্তাহ আগে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে

একজন কর্মকর্তা-কর্মচারী সর্বোচ্চ ৫ বছরের জন্য লিয়েন ছুটি পাবেন। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অনুমতি সাপেক্ষে তা ২ বছর বাড়িয়ে ৭ বছরে উন্নীত করা যাবে। লিয়েন আবেদন আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়। তবে এটিকে কেউ অধিকার হিসাবে বিবেচনা করতে পারবেন না। তবে বৈদেশিক চাকরি বা বেসরকারি চাকরির প্রার্থিতা নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি অথনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পাদন করবে। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সুপারিশ প্রদান ও বাস্তবায়ন করবে। 

লিয়েনে কর্মরত অবস্থায় শারীরিক অথবা মানসিক বৈকল্য বা অক্ষমতা দৃশ্যমান হলে তার দায়দায়িত্ব সরকার নেবে না। তবে লিয়েনে থাকাবস্থায় কেউ মৃত্যুবরণ করলে নিয়মানুযায়ী পেনশন প্রদানসহ প্রাপ্য সব সুবিধাদি তার পরিবারকে দেওয়া হবে। লিয়েন মঞ্জুর হওয়ার পর ভাড়া পরিশোধ সাপেক্ষে তাকে ৬ মাসের মধ্যে সরকারি বাসা ছেড়ে দিতে হবে।

এসএইচআর/জেডএস