রঙে রঙে সেজে উঠছে স্মৃতির মিনার/ ঢাকা পোস্ট

আর মাত্র এক দিন। ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতের পর ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে শুরু হবে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।  শ্রদ্ধাবনত চিত্তে জাতি স্মরণ করবে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের; যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম রাষ্ট্রভাষা বাংলা।

প্রতিবারের মতো এবারও মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি। রঙে রঙে সেজে উঠছে স্মৃতির মিনার।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মিনারের মূল বেদিসহ আশপাশের রাস্তার দেয়ালে নতুন রঙ করা হচ্ছে। ঝাড়ু ও ধোয়ামোছাসহ পরিষ্কার করার কাজ চলছে পুরোদমে। চলছে আলপনা, সাজসজ্জা ও গাছের গুঁড়ি রং করার কাজ।

শহীদ মিনারের আশপাশের সব দেয়ালে ছবি ও বাণীতে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে ভাষা আর দেশের কথা। কেউ ভাষা শহীদের ছবি আঁকছেন আবার কেউ বাংলা বর্ণমালা লিখছেন। এক কথায় বলা যায় আলপনা ও বর্ণমালায় সেজে উঠছে শহীদ মিনার এলাকা। প্রতি বছরের মতো এবারও চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা দেয়ালে আলপনা ও ভাষা আন্দোলনের নানা গান, কবিতা ও স্লোগান লেখার কাজ করছেন।

শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে। সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি আজ থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। গত দুইদিন ধরে দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

আলপনার কাজে নিয়োজিত ঢাবির চারুকলার শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত দুই বছর আলপনা আঁকার কাজ করছি। বেশ উপভোগ করি এটি। আমাদের এই সংস্কৃতি চালু থাকুক। দায়িত্ববোধ, দেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসার অংশ হিসেবে প্রতিবছরের মতো এবারও কাজ করছি।

একুশে ফেব্রুয়ারি ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আজ (রোববার) সংবাদ সম্মেলন করেছে ডিএমপি। এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ২১শে ফেব্রুয়ারির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১২টার পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রথমে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। তারা বিদায় নেওয়ার পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

এদিকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারির প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, যথাসময়ে আমরা কার্যক্রম শেষ করতে পারব।

উপাচার্য বলেন, দিবসটি পালনে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ঢাবির সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক গৃহীত সকল কর্মসূচির বাস্তবায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্য কাজ করবে। ডিএমপি, র‍্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ডিএসসিসি এবং গণমাধ্যমসহ সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও একুশে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী ঢাকা পোস্টকে বলেন, একুশ উদযাপন আমাদের রাষ্ট্রীয় আচার ও ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়। ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। শহীদ মিনারের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে যাবতীয় কাজ চলছে। আগামীকালের (সোমবার) মধ্যে শতভাগ প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করছি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল টিম টহল দেবে। তাছাড়া ঢাবির বিএনসিসি ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।

এইচআর/ওএফ