অমর একুশে বইমেলায় একদল দর্শনার্থীর কাছে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের পর আবারও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

এবার মোবাইল ছিনতাই করার সময় এক ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আটক ছিনতাইকারীর নাম জুম্মন। তার বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। তিনি ঢাকায় হাজারীবাগে থাকেন।

জানা যায়, শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পেছনে বইমেলায় আসা এক নারীর কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাই করে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র। ছাত্ররা তাকে আটক করার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলটি ছিনতাইকারী কৌশলে মাটিতে ফেলে দেন। ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি স্বীকার করেন মোবাইলটি ওই নারীর কাছ থেকে ছিনতাই করেছে।

উপস্থিত ছাত্ররা ছিনতাইকারীকে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলার নিরাপত্তায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়ার কাছে সোপর্দ করেন।

ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে ধরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র জালাল আহমদ জানান, আমি বাংলা একাডেমি  থেকে আসার সময় রাজু ভাস্কর্যের পেছনে এক নারীকে ‘আমার মোবাইল নিয়ে গেছে, আমার মোবাইল নিয়ে গেছে’ বলে চিৎকার করতে দেখি। আমি ছিনতাইকারীকে পেছন থেকে ধাওয়া করি। সে দৌড়াতে থাকে। পরে আমিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র ছিনতাইকারীকে পেছন থেকে ধাওয়া করে টিএসসি সংলগ্ন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গেটের সামনে ধরে ফেলি।

ভুক্তভোগী নারী অ্যাডভোকেট মুন্নি আক্তার মুন জানান, আমি বাংলা একাডেমি থেকে আসার সময় এই ছিনতাইকারী আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। আমি চিৎকার করলে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটক করে।

রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রাসেল মিয়া জানান, বাংলা একাডেমির কন্ট্রোল রুমে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং মোবাইল মালিকের কাছে মোবাইল ফেরত দেওয়া হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালী মন্দিরের সামনে থেকে বইমেলায় ঘুরতে আসা একদল দর্শনার্থীর কাছে পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে আটক হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই নেতা। পরে শাহবাগ থানার মামলায় এই দুই নেতাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গ্রেপ্তার দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব হোসেন রবিন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের অনুসারী। অপরজন মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোহাইমিনুল ইসলাম ইমন। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই শিক্ষার্থী নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে বইমেলায় চাঁদপুর থেকে আসা একদল দর্শনার্থীকে আটক করে। তারা ওই দর্শনার্থীদের মাদক ব্যবসা করে এমন অভিযোগ তুলে তাদের শরীর তল্লাশি করতে থাকেন। তল্লাশির পরে কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। ভুক্তভোগীরা চাঁদপুরে ফেরার টাকা নেই বললে ছিনতাইকারীরা ৬০০ টাকা ফেরত দিয়ে মোটরসাইকেল করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন উপস্থিত আশপাশের লোকজন তাদের আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।

এইচআর/এসএসএইচ/