নারীর প্রতি সহিংসতা এখন পৈশাচিক পর্যায়ে চলে গেছে
চলার পথে নারীদের নানা বাধা পার হতে হয়। বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। সেটি এখন এতোটাই বেড়েছে যে, সহিংসতা এখন পৈশাচিক পর্যায়ে চলে গেছে। রোববার (১৪ মার্চ) জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে অনলাইনে এক আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন যেমন বেড়েছে, তেমনি সহিংসতাও বেড়েছে। সহিংসতা এখন পৈশাচিক পর্যায়ে চলে গেছে। কন্যাশিশু কারো কাছেই যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে আমরা যাব কোথায়। তবে এখন কন্যাশিশুদের প্রতি যে অবিচারটি বিশেষভাবে লক্ষণীয় সেটা হলো বাল্যবিবাহ। করোনার জন্য অনেকের আয় কমে গিয়েছে। যার জন্য অনেক অভিভাবক ভেবেছেন যে, মেয়েটার বিয়ে দিলে একটা মুখ কমে যায়। বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ার এটা একটা কারণ। আমাদের এই জায়গাগুলোতে নজর দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সংসদ সদস্য ডা. ছামিল উদ্দীন শিমুল বলেন, করোনায় বাল্যবিয়ে আমাদের একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকাতে ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন নারী নেত্রীরা বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে কাজ করার ফলে এখন বাল্যবিয়ের হার কমে এসেছে। এর থেকে বুঝা যায় যে, করোনায় নারী নেতৃত্ব অনেক ভালো ভূমিকা রেখেছে।
সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা বলেন, আমরা এখনও অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চলমান কিছু নিয়ম থেকে বের হয়ে আসতে পারছি না। আমরা মেয়েরাও অনেক সময় মেয়েদের শত্রু হয়ে যাই। নারীদেরকে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, তবেই আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারব।
অন্যান্যরা বলেন, নারীদের এগিয়ে চলার পথে যেসব পুরুষ সহযোগিতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ। তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে অনেক নারী এগিয়ে যাচ্ছে। কন্যাশিশুদের অধিকার রক্ষার্থে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম সারাবছর বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকে।
এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে বর্তমানে নারীরা শিক্ষায়, পেশায় এগিয়ে এসেছে ও নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, এতকিছুর পরেও তাদের চলার পথ নিরাপদ হচ্ছে না। চলার পথে নারীদের নানা বাধা পার হতে হয়। এসব বাধা অনেককে নিস্তেজ করে দেয়। এটা নিয়ে আমাদের ভাবা দরকার। যারা সিদ্ধান্তগ্রহণ করেন তাদের কাছে অনুরোধ, তারা বিষয়টি নিয়ে ভাববেন। নারীরা যখন কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে না তখন আর সমস্যা থাকবে না। নারীরা দেশ ও জাতিকে আরো অনেক কিছু দিতে পারবে।
আলোচনায় আরও যুক্ত ছিলেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ সম্পাদক রাবেয়া বেগম, সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি প্রমুখ।
এমএইচএন/ওএফ