চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম মোবাইল ও মাদকের যে সমস্যায় ভুগছে তা থেকে মুক্তি দিতে পারে বই। বই মুক্তি দেয়, যুক্তি শেখায়। বইমেলা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ তুলে ধরতে সহায়তা করবে এই আমার আশা। এ কারণে চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে এ বইমেলার সার্বিক কার্যক্রমে আমি সংযুক্ত থেকে গর্বিত।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলা উপলক্ষে নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই মাঠে ২১ দিনব্যাপী বইমেলা শুরু হবে।

মেয়র বলেন, এবারের মেলার অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে নজরুল দিবস, মাতৃভাষা দিবস, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বসন্ত উৎসব, মরমী উৎসব, আবৃত্তি উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, শিশু উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, ছড়া উৎসব, কুইজ প্রতিযোগিতা, চাটগাঁ উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। ইতোমধ্যে মেলার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে প্রচুর অর্থ ব্যয়ে ধুলোবালিমুক্ত পরিবেশে চলাচল নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে ত্রিপল এবং ইট বিছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে নিরাপদ পরিবেশ।

জানা গেছে, মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। দেশের খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরা প্রতিদিনের বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেবেন।

এবারও মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু কর্নার, লেখক আড্ডাসহ নারী কর্নার এবং ওয়াইফাই জোন। এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত থাকবে। কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। মেলা মঞ্চে প্রতিদিনই নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনের আলোচনা সভায় বাঙালির সাহিত্য-ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ নানা বিচিত্র বিষয়ের সমাহার ঘটানো হয়েছে।

চসিক জানায়, মেলাকে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের লেখক, সাহিত্যিক, সংস্কৃতি কর্মী ও বইপ্রেমীদের নিয়ে বিভিন্ন উপ-পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় প্রতিদিনের অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে। অনুষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের জাগরণী ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশিত হবে।

মেলায় লেখক-পাঠক দর্শনার্থীরা যেন সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে বেড়াতে এবং বই ক্রয় করতে পারে সেজন্য প্রচুর খোলা জায়গা রাখা হয়েছে। প্রায় এক লাখ ২ হাজার ৩০০ বর্গফুটের সুবিশাল আয়তন জুড়ে মোট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৪০টি। এর মধ্যে ডাবল স্টল ৩২টি এবং সিঙ্গেল স্টল ৭৬টি। চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার সৃজনশীল অভিজাত প্রকাশনী সংস্থাগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে এবং তাদের স্টলও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামসহ মোট ১০৮টি প্রকাশনা সংস্থা মেলায় অংশ নিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— অমর একুশে বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মেলা কমিটির সদস্য সচিব লুৎফুন নাহার, চসিক শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক।

এমআর/এসএসএইচ/