প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যমজ শিশু রাবেয়া-রোকেয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার মাসে ‘অপারেশন ফ্রিডম’-এর মাধ্যমে জোড়া মাথা থেকে মুক্তি পাওয়া রাবেয়া-রোকেয়ার গৃহে প্রত্যাবর্তন আমাদের সবার জন্য মুক্তির প্রতীক। 

তিনি বলেন, সফল এই অস্ত্রোপচার শুধুমাত্র বাংলাদেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতিই নির্দেশ করে না, বরং এটি জনগণের প্রতি গণতান্ত্রিক সরকারের দায়বদ্ধতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। 

রোববার (১৪ মার্চ) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জোড়া মাথার শিশু রাবেয়া-রোকেয়ার সফল অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসা সেবা প্রদানের পর ছাড়পত্র প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও টেলিকনফারেন্স (ভিটিসি) এর মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাবেয়া-রোকেয়া’র ছাড়পত্র প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাবেয়া-রোকেয়ার মতো বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অঙ্গীকার।

ভবিষ্যতে রাবেয়া-রোকেয়া যেন সিএমএইচসহ যেকোনো সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা নিতে পারে, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশে ইতোমধ্যেই সিএমএইচ ঢাকা কর্তৃক শিশু দুটির জন্য ‘আজীবন চিকিৎসা সেবা কার্ড’ দেওয়া হয়েছে।  

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, রাবেয়া-রোকেয়ার চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত সামরিক-বেসামরিক ও বিদেশি চিকিৎসক এবং রাবেয়া-রোকেয়ার পরিবার এবং বিভিন্ন পদবির সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় ২০১৯ সালের ১ আগস্ট ঢাকা সিএমএইচ-এ হাঙ্গেরির একটি মেডিকেল টিম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, সিআরপি ও শিশু হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সার্জন, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সহায়তাকারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল টিম কর্তৃক ৩৩ ঘণ্টাব্যাপী একটি বিরল অপারেশনের মাধ্যমে মাথা জোড়া লাগানো যমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। 

গত ১৬ জুলাই ২০১৬ সালে পাবনা জেলার অন্তর্গত চাটমোহর থানার গ্রাম্য দম্পতি মো. রফিকুল ইসলাম এবং মোছা. তাছলিমা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করে জোড়া মাথার যমজ শিশু রাবেয়া-রোকেয়া। এ ধরনের জোড়া মাথার শিশুর বিযুক্তকরণ কার্যক্রমে সফলতা অর্জনের উদাহরণ অত্যন্ত কম। এ বিযুক্তিকরণ অপারেশন বিশ্বের ১৭তম সফল অপারেশন ও বাংলাদেশে প্রথম। 

এনএম/আরএইচ /এমএমমজে