দ্বিতীয় দিনের মতো তীব্র যানজট বাড্ডা-রামপুরা সড়কে
রাজধানীর সড়কগুলোতে যানজট প্রতিদিনের ঘটনা হলেও কখনও কখনও তা ছাড়িয়ে যায় প্রতিদিনের চিত্র। গতকাল থেকে রাজধানীর রামপুরা-বাড্ডা সড়কেও লেগে থাকছে তেমন যানজট। রোববার (১৪ মার্চ) সকাল থেকেও এই সড়কে দেখা যাচ্ছে তীব্র যানজট। এ সড়কে যানবাহনগুলো কখনও থেমে থাকছে, কখনও খুব ধীর গতিতে চলছে।
মেট্রোরেলের (লাইন-১) ইউটিলিটি ভেরিফিকেশনের জন্য মেরুল বাড্ডা অংশে রাস্তা খুঁড়ে কাজ করা হচ্ছে। আর এর কারণে নতুন বাজার থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত যানবাহনের ধীর গতি থাকায় এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
একজন ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে গতরাতে বলেন, মেট্রোরেলের ইউটিলিটি ভেরিফিকেশনের কাজের জন্য মেরুল বাড্ডায় রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। সেখান থেকেই যানজটের সৃষ্টি। ১৩ মার্চ বিকেল থেকে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মেরুল বাড্ডা অংশে রাস্তা খোঁড়ার কারণে সড়কটি সরু হয়ে গেছে, সে কারণে একটি একটি করে যানবাহন সে স্থান পার হচ্ছে খুব ধীর গতিতে। মূলত এই কারণে এই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বিকেল থেকে এই যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। আমার বাসে যাত্রী পরিপূর্ণ থাকলেও এখানে যখন যানজটে এসে পড়ছি তখন বেশিরভাগ যাত্রী নেমে হেঁটে যাচ্ছেন, ভাড়া ফেরত নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এই পথটুকু। এছাড়া আমাদের ট্রিপও কমে গেছে এখানে যানজটে গাড়ি বসে থাকার কারণে।
বাসচালক তৈয়ব আলী
সরেজমিনে এই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, নতুন বাজার এলাকা থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত যানজট। নতুন বাজার থেকে প্রতিটি যানবাহন খুব ধীর গতিতে মেরুল বাড্ডার দিকে আসছে। ফলে এই সড়কটুকু পার হতে প্রতিটি যানবাহনকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।
এই সড়কে চলাচলকারী রাইদা পরিবহনের একটি বাসের চালক তৈয়ব আলী বলেন, গতকাল বিকেল থেকে এই যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। আমার বাসে যাত্রী পরিপূর্ণ থাকলেও এখানে যখন যানজটে এসে পড়ছি তখন বেশিরভাগ যাত্রী নেমে হেঁটে যাচ্ছেন, ভাড়া ফেরত নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এই পথটুকু। এছাড়া আমাদের ট্রিপও কমে গেছে এখানে যানজটে গাড়ি বসে থাকার কারণে।
আকাশ সুপ্রভাত পরিবহনের বাসচালক লিয়াকত মিয়া বলেন, নতুন বাজার থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত আসতে প্রতিটি যানবাহনকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় দিতে হচ্ছে। এতে করে যাত্রীসহ আমরাও বিরক্ত। প্রতিবার এই সড়ক অতিক্রম করার সময় যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে। মেরুলের ওই রাস্তা যদি আরেকটু প্রসারিত রেখে মেট্রোরেলের কাজ করতো তাহলে এতটা যানজট এখানে হতো না।
মেট্রোরেলের (লাইন-১) কাজে নিয়োজিত এরশাদ আলী নামে একজন জানান, মেট্রোরেলের ইউটিলিটি ভেরিফিকেশনের কাজের জন্য মেরুল অংশে রাস্তার কিছু অংশ গত শুক্রবার খোঁড়া হয়েছে। তারপরও যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু শনিবারে সেই খোঁড়া অংশ ঘিরে ফেলে কাজ করার পর থেকেই যানজট সৃষ্টি হয়েছে। মেট্রোরেলের (লাইন-১) ইউটিলিটি ভেরিফিকেশনের কাজ এখানে শেষ হওয়ার পর কুড়িল থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কের আরও কয়েকটি স্থানেও এই কাজ শুরু হবে।
এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রী নাজমুল হক এই যানজটের বিষয়ে বলেন, গতকাল থেকে এই যানজট। আজ কাজে বের হয়েও দেখছি এমন যানজট আছেই। এক ঘণ্টা বাসে বসে থাকার পর, হেঁটেই মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত এলাম। এখন রামপুরা ব্রিজের সামনে গিয়ে অন্য বাসে উঠবো। উন্নয়ন কাজ তো হবেই, কিন্তু সেখানে জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল সংশ্লিষ্টদের। তাহলে আর জনগণের এমন ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
এএসএস/এনএফ