প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা, সন্ত্রাস দমন বা অন্য কোনো কাজ করতে গেলে জনগণের সহায়তা একান্তভাবে দরকার। পুলিশ তার পেশাদারিত্ব ও সহমর্মিতা দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করবে।

৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ১৭ মিনিটের দিকে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন তিনি।

এরপর নিজের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর বিরাট অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙ্গালির ওপর হামলা চালাতে শুরু করে, রাজারবাগে পুলিশ বাহিনীর ওপর তারা আক্রমণ করে, পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত বীরত্বের সাথে তার প্রতিরোধ করবার চেষ্টা করে এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই সারদা একাডেমিতেও হানাদার বাহিনী আক্রমণ করেছিল। এখানে যারা ছিলেন তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন, ২৪ জন সদস্য শাহাদাত বরণ করেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধের পর ৮২টি থানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন এবং এই একাডেমিও উন্নত করেন। তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে। ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। ১৫ আগস্ট আমাদের আশা সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দেওয়া হয়। এরপর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। সংবিধান লঙ্ঘন করে বারবার যে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে তার ফলে পুলিশ বা সশস্ত্র বাহিনীর অনেককেই জীবন দিতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। মানুষ ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে। তবে এর ভালো দিক যেমন আছে, আবার বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মানিলন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম, মানবপাচার সেটাও কিন্তু নতুন নতুন রূপে সামনে আসছে। এগুলো মোকাবিলা করার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের পুলিশ বাহিনী বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। একটি ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর দুই সদস্য জীবন দিয়েছিলেন হলি আর্টিজানে। প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশের সাহসী ভূমিকা বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখতে সহায়তা করেছে। পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের পুলিশ বাহিনী ভূয়সী প্রশংসার কাজ করছে।

তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ব্যাপক প্রশংসা লাভ করেছে। যখনই প্রয়োজন হয় সেটা অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস বা পুলিশের জরুরি সেবা হোক অথবা কেউ বিপদে পড়লে উদ্ধার করা, নির্যাতনের শিকার নারীদের পাশে থাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ সহযোগিতা পাচ্ছেন। আমরা চাই পুলিশ বাহিনী পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে উঠবে। সেজন্য বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি এবং অনেক সরঞ্জামা ক্রয় করেছি।  

শেখ হাসিনা বলেন,  গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। পুলিশ বাহিনীকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে তারা চলবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

এমএসআই/ওএফ