জনপ্রশাসনের অর্থ ব্যয়ে ক্ষমতা চান জেলা প্রশাসকরা
জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন প্রকল্প ও কাজের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে অর্থ বরাদ্দ করে সেগুলো দেখভাল করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। ওই অর্থ ব্যবহারের ক্ষমতা এবার নিজেদের হাতে নিতে চান জেলা প্রশাসকরা।
ডিসি সম্মেলন শুরুর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন পিরোজপুর ও ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তার দায়িত্ব জেলা প্রশাসককে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। এখন এ দায়িত্ব পালন করেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি হিসেবে দুই জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেছেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের বাসভবনসহ জেলা পর্যায়ে ছয়তলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ১২ তলা সার্কিট হাউজ ও কনভেনশন সেন্টার প্রকল্পসমূহ গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। এতে প্রকল্পের প্রাক্কলন, ডিজাইন ও মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে এবং গুণগত মান বজায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হয়। এখানে জেলা প্রশাসকদের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলে প্রকল্পের প্রাক্কলনসহ কাজের চাহিদা নিরূপণ সহজ হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকরা আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেলে প্রকল্পের মনিটরিং সহজ হওয়ার পাশাপাশি প্রকল্পের গুণগত মান বজায় রেখে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গাদের তো মারতে পারি না, অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউএনওদের সান্ধ্যকালীন অফিসে জনবল দরকার
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) আবাসিক ভবনে সান্ধ্যকালীন অফিস করতে জনবল চেয়ে প্রস্তাব করেছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক। এ বিষয়ে যুক্তি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে অফিসের বাইরে অবস্থান করতে হয়। ফলে অফিস সময়ে সব কার্যাদি সম্পাদন করা সম্ভব হয় না।
এ প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, উপজেলায় ভিআইপি অতিথি এলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনে আপ্যায়নের কাজে অন্য কর্মচারীদের সম্পৃক্ত হতে হয়। বাবুর্চির পদ না থাকায় ভিআইপিদের আপ্যায়নে বিঘ্ন ঘটে। তাই অফিস সময়ের পর অফিসের কার্যাদি নির্বিঘ্নে সম্পাদন করার জন্য আবাসিক কার্যালয়ে একটি করে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা (পূর্বপদ সাঁটমুদ্রাক্ষরিক), অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ সৃজন করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন : নির্বাচনের আগে নতুন রাস্তা নয় : ডিসিদের ওবায়দুল কাদের
গত মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৩।
সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতিবছর এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন : দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে দেশ উন্নয়ন সম্ভব নয়
এবারের সম্মেলনে মোট ২৬টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ছিল ২০টি। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে মোট ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়, চলমান ডিসি সম্মেলনে আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সংক্রান্ত। এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৩টি। ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১৫টি প্রস্তাব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১৩টি, সুরক্ষা সেবা বিভাগ সংক্রান্ত ১১টি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ১০টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
এসআর/এসকেডি/জেএস