বাসা ভাড়ার কথা বলে খুন করা হয় সাংবাদিক আফতাবকে
একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি রাজু মুন্সিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
এটিইউ জানায়, বাসা ভাড়ার কথা বলে ঘাতকরা সাংবাদিক আফতাব আহমেদের বাসায় প্রবেশ করে। এ ঘটনায় ঘাতকদের সহযোগিতা করেন সাংবাদিক আফতাবের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির। পরে ঘাতকরা বাসায় প্রবেশ করে ডাকাতির চেষ্টা করলে সাংবাদিক আফতাব তাদের বাধা দেয়। এতে ঘাতকরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
বিজ্ঞাপন
ঘাতক রাজু মুন্সি ও সাংবাদিক আফতাবের গাড়িচালক আত্মীয় বলেও জানায় এটিইউ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বারিধারায় এটিইউর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স) এম এম হাসানুল জাহিদ এসব তথ্য জানান।
হাসানুল জাহিদ বলেন, আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পলাতক আসামি রাজু মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে এটিইউর একটি দল। রাজু দীর্ঘ নয় বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতেন না।
তিনি বলেন, ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ পশ্চিম রামপুরার ওয়াপদা রোড এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার হুমায়ুন কবিরের সহায়তায় বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে রাজুসহ বেশ কয়েকজন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর তার বাসায় প্রবেশ করেন। বাসায় প্রবেশ করে তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করার চেষ্টা করে। লুট করার সময় ঘাতকদের বাধা দেয় ও চিৎকার করতে থাকেন সাংবাদিক আফতাব। বাধা দেওয়ায় ও চিৎকার করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাতকরা তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। ঘটনার পরের দিন ২৫ ডিসেম্বর ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের এক বছরের মাথায় রাজু মুন্সিসহ দুইজন জামিনে বের হয়ে আত্মগোপন চলে যায়। পরে ২০১৭ সালে রাজুসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রামপুরার নিজ বাসা থেকে সাংবাদিক আফতাব আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক আবদুর রহমান সরদার। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন বিলাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল ও গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। অপরজন সবুজ খানকে সাত বছর কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এমএসি/ওএফ