ফরিদপুরের বরকত-রুবেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করেছে পরিবার।
শনিবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের মেয়ে যাওয়াতা আফনান রাদিয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আদিয়াত হাসান রাফিম ও সাজ্জাদ হোসেন বরকতের মেয়ে ইশরাত জাহান আদ্রিতি।
বিজ্ঞাপন
যাওয়াতা আফনান রাদিয়া বলেন, দুদক যেখানে ৭২ কোটি টাকার মামলা করে সেখানে সিআইডি করলো দুই হাজার কোটি টাকার, দুই বছরে অনুসন্ধান করে দুদক ৮০০ বিঘার মতো জমির সন্ধান পেলেও সিআইডি ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি পায় কি করে?
৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমির তথ্য সিনেমার গল্পকে হার মানিয়েছে দাবি করে রাদিয়া বলেন, ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমির পরিমাণ যে ভুল তার প্রমাণ আছে৷ সিআইডিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হয়েছে যা পরিকল্পিত।
লিখিত বক্তব্যে রাদিয়া বলেন, আমার বাবা ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ব্যবসায়ী এবং ফরিদপুর প্রেসক্লাবের টানা ৫ বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তালিকাভুক্ত দৈনিক ভোরের প্রত্যাশার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমার চাচা সাজ্জাদ হোসেন বরকত ব্যবসায়ী এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বরত ছিলেন। এছাড়া ফরিদপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি তিনি। ভুল তথ্য পরিবেশনের কারণে আমরা সামাজিকভাবে অপরাধী হয়ে গেছি ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। একটি চক্র এই মামলাকে আলোচিত এবং বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার বাবা ২০০০ সাল থেকে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সরকারি কাজের বিপরীতে ব্যাংক ঋণ নিয়ে পরিচালনা করা হয়। বাবার নামে ও কোম্পানির নামে যে জমি রয়েছে তার পরিমাণ ১৫৯ এবং এই জমিগুলো তিনটি ব্যাংকে বন্ধক দেওয়া। ১৫৯ বিঘার মধ্যে চর অঞ্চলে ৩০ বিঘার মত জমি রয়েছে। তিনটি ব্যাংকে বাবার নামে এখনও প্রায় ৩০ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।
বরকতের সম্পদের বিষয়ে রাদিয়া বলেন, ২০০ বিঘা জমি আছে, যা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক সরকারি কাজের বিপরীতে ব্যাংকে বন্ধক এবং ঋণ প্রায় ২০ কোটি টাকা। এছাড়া চর অঞ্চলে তার একটি এগ্রো ফার্ম আছে যা ৪০০ বিঘার জমির উপর।
রাদিয়ার দাবি, গত বছর ৭ জুন গ্রেফতারের পর পুলিশ সুপার প্রেস ব্রিফিংয়ে বললেন বদরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে যা ৯ জুন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অথচ অস্ত্রসহ সব মামলার এজাহারে বাইপাস এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়। আমার বাবা ও চাচার নামে ৪টি লাইসেন্স করা অস্ত্র থাকলেও তাদের নামে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়৷ গ্রেফতারের পর তাদের নামে ১২টি মিথ্যা মামলা দিয়ে ২৭ দিন রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ জুন রাতে বরকত ও রুবেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে এ বছর (২০২০ সাল) পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন তারা। এছাড়া, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়িরও মালিক হয়েছেন। এছাড়া বিপুল পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন।
জেইউ/এসকেডি