দেশে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের (তিন চাকার যান) সংখ্যা প্রায় ১০ লাখের কাছাকাছি। কিন্তু এ যানটি তুলনামূলক ও অনিরাপদ। দেশের তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ জনগণের আর্থিক সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় নিয়ে এর স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিরাপদ যানে রূপ দেওয়ায় জোর দিয়েছেন বক্তারা।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলে (বিইপিআরসির) অনুষ্ঠিত ‘রিভিউ অব বিইপিআরসি ফান্ডেড অ্যাপ্লাইড রিসার্চ প্রজেক্ট’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বিষয়টি উপস্থাপন করেন।

বিইপিআরসির চেয়ারম্যান (সচিব) জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী বীরবিক্রম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এহসান। সেমিনারে বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের অর্থায়নে চলমান গবেষণা প্রকল্পগুলোর গবেষকরা তাদের প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সমস্যা সমাধানে মনোযোগী হতে হবে। প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট করে গবেষণা করতে হবে। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের স্বনামধন্য গবেষকদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে হবে। গবেষণা কার্যক্রম শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক না হয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবের ব্যবস্থা করতে হবে। গবেষকদের অনুপ্রাণিত করতে বেস্ট সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড দিতে হবে।

বিইপিআরসির চেয়ারম্যান (সচিব) জাকিয়া সুলতানা বলেন, উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী হাইওয়েতে থ্রি হুইলার, অটোরিকশা, অটোটেম্পু ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। এসব যান অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে, যা যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ। তাছাড়া আকৃতিতে ছোট এবং অনিরাপদ হওয়ায় এ সব যান দুর্ঘটনায় পড়ে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। কোনো লাইসেন্স বা রুট পারমিট না থাকায় এসব যান আইনগতভাবে অবৈধ। এছাড়া এতে ব্যবহৃত ব্যাটারিগুলো গ্রিড থেকে সরাসরি চার্জ করায় গ্রিডের ওপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এর ব্যাটারি নষ্টের কারণে পরিবেশের ওপর কী প্রভাব পড়ে তা নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, অবৈধভাবে চলাচল করা ইজিবাইকগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা হোক। এছাড়া যাত্রী নিরাপত্তা, পরিবেশ ও বিদ্যুৎ সেক্টরের ওপর ইজিবাইকের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড ডিজাইন প্রণয়ন করা হোক। এ ডিজাইন ভবিষ্যতে ইজিবাইক আমদানি ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

আরএম/এসএসএইচ